Tuesday, June 30, 2020

মুসলিম পাকিস্তান সেনা বাহিনী কর্তৃক তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা বাংলাদেশ) হিন্দু মহিলাদের ওপর অমানুষিক অত্যাচারের কাহিনী।

যে সব হিন্দুরা পাকিস্থান/বাংলাদেশ ও মুসলিম প্রেমে বিভোর লেখাটা তাদের জন্য।
.....................................

"যুদ্ধ শেষে ক্যাম্প থেকে কয়েকটি কাঁচের জার উদ্ধার করা হয়,যার মধ্যে ফরমালিনে সংরক্ষিত ছিল মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন অংশ। অংশগুলো কাটা হয়ে ছিল খুব নিখুঁতভাবে।"
- ডাঃ বিকাশ চক্রবর্তী, খুলনা

.
"মার্চে মিরপুরের একটি বাড়ি থেকে পরিবারের সবাইকে ধরে আনা হয় এবং কাপড় খুলতে বলা হয়। তারা এতে রাজি না হলে বাবা ও ছেলেকে আদেশ করা হয় যথাক্রমে মেয়ে এবং মাকে ধর্ষণ করতে। এতেও রাজি না হলে প্রথমে বাবা এবং ছেলে কে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয় এবং মা মেয়ে দুজনকে দুজনের চুলের সাথে বেঁধে উলঙ্গ অবস্থায় টানতে টানতে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।"
-মোঃ নুরুল ইসলাম, বাটিয়ামারা কুমারখালি।

.
"আমাদের সংস্থায় আসা ধর্ষিত নারীদের প্রায় সবারই ছিল ক্ষত-বিক্ষত যৌনাঙ্গ। বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ছিড়ে ফেলা রক্তাক্ত যোনিপথ, দাঁত দিয়ে ছিড়ে ফেলা স্তন, বেয়োনেট দিয়ে কেটে ফেলা স্তন-উরু এবং পশ্চাৎদেশে ছুরির আঘাত নিয়ে নারীরা পুনর্বাসন কেন্দ্রে আসতো।" 
-মালেকা খান
.
যুদ্ধের পর পুনর্বাসন সংস্থায় ধর্ষিতাদের নিবন্ধীকরণে যুক্ত সমাজকর্মী।



.
"১৮ ডিসেম্বর মিরপুরে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া একজনকে খুঁজতে গিয়ে দেখি মাটির নিচে বাঙ্কার থেকে ২৩জুন সম্পূর্ণ উলঙ্গ, মাথা কামানো নারীকে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে পাক আর্মিরা।"
-বিচারপতি এম এ সোবহান
.
"যুদ্ধের পর পর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে উদ্বাস্তুর মতো ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে বেশ কিছু নারীকে। তাদের পোশাক এবং চলাফেরা থেকে আমরা অনেকেই নিশ্চিত জানতাম ওরা যুদ্ধের শিকার এবং ওদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।"
-ড. রতন লাল চক্রবর্তী, অধ্যাপক ইতিহাস বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
.
"কোনো কোনো মেয়েকে পাকসেনারা এক রাতে ৮০ বারও ধর্ষণ করেছে।"
-সুসান ব্রাউনি মিলার (এগেইনেস্ট আওয়ার উইল: ম্যান, উইম্যান এন্ড রেপঃ ৮৩)
.
"এক একটি গণধর্ষণে ৮/১০ থেকে শুরু করে ১০০ জন পাকসেনাও অংশ নিয়েছে।"
-ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির গ্রন্থ “যুদ্ধ ও নারী"।
.
মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী। এই নরপশুর নেতৃত্বেই রাওফরমান, রহিম খান, টিক্কা খানের মত পাকিস্তানী জেনারেল এদেশের উপর চালায় শতাব্দীর ঘৃণ্যতম গণহত্যা। সেই সাথে এসব বিকৃত রুচির জেনারেলদের পরিকল্পনায় সংঘটিত হয় ধর্ষণের মহোৎসব।
.
আমার এখনকার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু মুক্তিযুদ্ধে নারী নির্যাতন, যত ঘাঁটছি আমার বিস্ময় তত বেড়েই চলছে। এই সেক্টরে এসে আমরা বরাবরই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পুরনো কিছু গল্প বলে পাশ কাটিয়ে যেতে চাই, আর এর ফাঁকে আড়াল হয়ে যায় নির্মমতার অনেক গল্প, যে গল্প হার মানাবে হিটলারের নির্মমতাকে, আনা ফ্র্যাঙ্কের ডাইরিকে। আমার হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত ধর্ষণের সংখ্যা হয়ত দশ লক্ষও হতে পারে।
জ্বি, ভাই আমি দশ লক্ষই বলছি।
হাতে যথেষ্ট প্রমাণ আছে দেখেই বলছি। সম্ভবত সবচেয়ে কম সময়ে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের রেকর্ডটাও আমাদের পকেটেই যাচ্ছে। আর এই ধর্ষণ উৎসবের হালালাইজেশানটা করা হয়েছিলো ধর্মের নামে।
.
ব্রিগেডিয়ার আবদুল রহমান সিদ্দিকী তার "East Pakistan The End Game" বইতে লেখেন, "নিয়াজী জওয়ানদের অসৈনিকসুলভ, অনৈতিক এবং কামাসক্তিমূলক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করতেন। 'গতকাল রাতে তোমাদের অর্জন কি আমার বাঘেরা?' চোখে শয়তানের দীপ্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করতেন তিনি। অর্জন বলতে তিনি ধর্ষণকেই বোঝাতেন।"
.
সেপ্টেম্বরে পূর্ব পাকিস্তানের সকল ডিভিশান কমান্ডারের কনফারেন্সে এক অফিসার তুলেছিলেন পাকিস্তানি সেনা কর্তৃক বাঙ্গালি নারীদের ধর্ষনের প্রসঙ্গ । নিয়াজী তখন সেই অফিসারকে বলেন,
"আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি। যুদ্ধক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নিও।"
তারপর তিনি হেসে বলেন,
"ভালই তো হচ্ছে, এসব হিন্দুয়ানি বাঙ্গালি রক্তে সাচ্চা মুসলিম পাঞ্জাবি রক্ত মিশিয়ে তাদের জাত উন্নত করে দাও।"
আর এই ধর্ষণের পক্ষে তিনি যুক্তি দিয়ে বলতেন,
"আপনারা কি ভাবে আশা করেন একজন সৈন্য থাকবে,যুদ্ধ করবে, মারা যাবে পূর্ব পাকিস্তানে এবং যৌন ক্ষুধা মেটাতে যাবে ঝিলমে?"
ধর্ষণে লিপ্ত এক পাকিস্তানী মেজর তার বন্ধুকে চিঠি লিখেছে;
"আমাদের এসব উশৃঙ্খল মেয়েদের পরিবর্তন করতে হবে যাতে এদের পরবর্তী প্রজন্মে পরিবর্তন আসে, তারা যেন হয়ে ওঠে ভালো মুসলিম এবং ভালো পাকিস্তানি।"

স্বাধীনতার পর ধর্ষিতা বাঙালি মহিলাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত অষ্ট্রেলিয়ান ডাক্তার জেফ্রি ডেভিস গনধর্ষনের ভয়াবহ মাত্রা দেখে হতবাক হয়ে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে আটক পাক অফিসারকে জেরা করেছিলেন যে তারা কিভাবে এমন ঘৃণ্য কাজ-কারবার করেছিলো। অষ্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক বিচলিত হলেও পাক অফিসারদের সাচ্চা ধার্মিক হৃদয়ে কোন রকম রেখাপাত ঘটেনি। তাদের সরল জবাব ছিল,
"আমাদের কাছে টিক্কা খানের নির্দেশনা ছিলো যে একজন ভালো মুসলমান কখনই তার বাবার সাথে যুদ্ধ করবে না। তাই আমাদের যত বেশী সম্ভব বাঙালী মেয়েদের গর্ভবতী করে যেতে হবে।"
নিয়াজী ধর্ষণে তার সেনাদের এতই চাপ দিতেন যে তা সামলে উঠতে না পেরে এক বাঙালি সেনা অফিসার আত্মহত্যা করতে বসেন।

ঘৃণা আর ভালোবাসা একটা মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ, আপনি কাউকে প্রচণ্ড ভালোবাসতে পারেন শুধুমাত্র তখনই যখন আপনি ঘৃণা করতে পারবেন তার বিপরীত সত্ত্বাকে। আপনি নিজেকে মনেপ্রাণে একজন বাঙ্গালি, একজন দেশপ্রেমিক তখনই বলতে বলতে পারবেন যখন পাকিস্তানকে, তাদের সমর্থকদের মনে প্রাণে ঘৃণা করতে পারবেন।
.
কৃতজ্ঞতায়ঃ শহীদ রুমী স্কোয়াড(সংগৃহীত)।
ফেসবুকের মাধ্যমে পাওয়া।


 Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Vande Mataram!! Saroop Chattopadhyay.

Saturday, June 13, 2020

তৃণমলের মা মাটি মানুষ এর বর্তমান অবস্থা, আর আমার মত একজন তৃণমূলের প্রথম দিনের সৈনিকের আজকে তৃণমূলের সমালোচনা এবং করোনা মোকাবিলায় মমতা ব্যানার্জির ব্যর্থতার ও বর্তমান অসহায় দশার কারণ বিশ্লেষণ।

কেউ কেউ করোনা আর আমার বর্তমান সমালোচনা সহ্য করতে পারছেন না।
তাদের বলি:
অসৌজন্য, আর দুর্নীতির রাজনীতি এর প্রতিবাদ করে আমিতো প্রায় এক বছর আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছি।
সেটা তো প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন এই বলেছিলাম।
চড়, কোমরে দড়ি এইসবে আমি নেই আবার পরে চড়টা আদর বা কোমরে দড়িটা পায়ে পড়ি তাতেও আমি নেই।
প্রতিহিংসা, গালাগালি, ব্যক্তিগত আক্রমণ, খুনোখুনি, পুলিশি অত্যাচার এসবের রাজনীতি আমি সমর্থন করিনা।

YouTube Link:
https://youtu.be/5L_3QSigsh0

আর বাকিটা বললে তো পুরোটাই খুলে বলতে হবে।।

তার আগে আমাকে দেওয়া হুমকির জবাবে আমার এই ভিডিওটি দেখুন।

"সোজা সাপটা" স্বরূপ চট্টোপাধ্যায় ~ "তৃণমূল কংগ্রেস ভয় পেয়েছে"। 
কেন জানতে দেখুন এই ভিডিও।
দয়া করে পুরোটা শুনুন।
YouTube: https://youtu.be/AXDtEiQqd_8

কে যেন বলেছিল করোনা একটা চক্রান্ত, দিল্লির দাঙ্গা থেকে মানুষকে ভ্রমিত করতে?

কে যেন অপদার্থ প্রশাসক বসিয়ে রেখেছে শুধু সে দুধেল গাই বলে?
কে যেন দুধেল গাইদের ছার দিয়ে রেখছেন এখন অবধি, এবং লাথিশ্রী পুরস্কার বিতরণ করেন।

আর দুধ দেওয়া প্রশাসন আকশি দিয়ে মৃতদেহ টানাটানি করে, সেগুলোও তো বলতে হয়।

আর দুর্নীতি সিন্ডিকেট কাটমানি এসব তো দলে থাকতেই প্রতিবাদ করেছিলাম।
এরা জয় বাংলা বলে পার্টির কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিহারী পরামর্শ দাতা এনে যে কথাটা বলল, সেটা বহুদিন আগেই বলেছি।
আমার ব্লগে পরে দেখ এমনকি কালিয়াগঞ্জ দাঙ্গার সময়ই বলেছিলাম আইনের চোখে সবাই সমান।

এখন তো "অনুগামী" প্রধান ও inactive, আর কতদিন থাকবেন কেউ জানে না।

দুধ দেওয়া প্রশাসকের ব্যর্থতার কথা প্রকাশ করতে সাধন পান্ডেকে "শো কজ" করা হল, সুব্রত মুখার্জীকে ঘুরিয়ে কথা শোনাল।

তৃণমূল কংগ্রেস এখন তৈল মর্দনকারি আর দুধেল গাইদের জন্য।
তৈল মর্দন করলে কর্নেলের মতন চরম ব্যর্থ (অতগুলো লোকসভা দায়িত্ব নিয়ে দলকে হারাল) লোকও পুরস্কৃত হন, বালুদা (উত্তর ২৪ পরগনায় ভরাডুবি) ও বক্সীদার (এর কথাতো যত কম বলা যায় তত ভাল, সবার মাথায় ওপর বসে মুখ খ্যেচায়.. শান্তনু ঠাকুর নাকি বাচ্চা ছেলে, তাকে দলে নেওয়া যায় না ইত্যাদি) মত অযোগ্য লোকেরাও পদ এ থেকে যায়। 
আর কিছু হাততালি মার্কা যাত্রাদলের বা নকশাল গণসঙ্গীত গোছের চ্যংড়া বা আঁতেলরা টিভিতে ভাট বকে ও জয় বাংলা বলে "মম" সহযোগে মহানন্দে দিন কাটায়।

আর দুধেল গাই:
আমি বারবার বলেছি, মালদা, বহরমপুর, রায়গঞ্জে জীবনে তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে না।
তাও মাননীয়া যদি লাথি খেতে চান, তো ভালই।।

তাই তৃণমূলের:

মা আজ দুধেল লাথি খাচ্ছে...
মাটি আজ সিন্ডিকেট এর দখলে...
ভাল মানুষরা আজ আর সঙ্গে নেই।।


আমি তো একবছর আগেই লিখেছিলাম:
তৃণমূল কংগ্রেসের পতনের কারণ ও আন্ত্মসমালোচনা, একটি কাল্পনিক প্রতিবেদন। Reasons for downfall of Trinamool Congress and Self Criticism by few veteran TMC men ~ A fictional article.
Link:

আমার এক ফেসবুক বন্ধু পিনাকী মুখোপাধ্যায় এর সংযোজন:
--_---------_-----
"আমি একটা সময় দিদির অন্ধভক্ত ছিলাম। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত আর রাতারাতি বিরোধীশূণ‍্য করতে গিয়ে বেনোজল ঢোকানো দেখে হতাশ হয়ে গেছি। যারা এখন নীচুতলায় তৃণমূলের নেতা হয়ে ছড়ি ঘোরায় তারা ২০১১ এর আগে অবধি বেশিরভাগ লাল ঝান্ডার আশ্রয়ে ছিল। ফলে যত সময় এগিয়েছে পুরোনো লোকেরা যারা প্রথম থেকে দলটাকে ভালবেসে সমর্থন করতো তারা হয় পেছনের সারিতে চলে গেছে নাহলে বসে গেছে। 

দিদি বরাবরই আবেগপ্রবণ রাজনীতি করতেন। কিন্তু প্রশাসক হিসেবে ওই পদ্ধতি নেবার ফলে ব‍্যাপারটা খামখেয়ালিপোনা হয়ে গেল। সাথে ওনার বরাবরের অভ‍্যেস কারুর কথা না শোনা। ওনার মতের সাথে সহমত না হলেই তাকে দুরে ঠেলে দেওয়া। 

ফলে একদল স্তাবক পরিবেষ্টিত হয়ে গেলেন অচিরেই। খুব দুঃখ লাগে ভাবলে যে ২০১১ তে উনি যে পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন সেটা মূলত জার্সি পরিবর্তনেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেল। 

আর প্রতিহিংসার রাজনীতি বা তোষণের রাজনীতি নিয়ে আপনি অনেকটাই বলে দিয়েছেন। 

শুধু একটা জিনিস বলতে চাই, আমার মাতৃভাষার কিছু শব্দ সাম্প্রদায়িক এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম বলে আসা সেই শব্দ কারুর ভাবাবেগে আঘাত লাগার অজুহাতে বদলাতে হবে, এগুলো প্রশাসকের পক্ষপাতিত্বকেই বেশি করে ফুটিয়ে তোলে। বিগত কয়েকদিনে সোশাল মিডিয়ার মাধ‍্যমেই জানতে পারলাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তর "রোমিং থেকে রাম শব্দটা এসেছে" "রামধনু হয়ে গেল রংধনু" বা আদি ভারতের অধিবাসীরা বিদেশীদের কাছে যুদ্ধে হেরে যাওয়ায় তাদের রাক্ষস বলে দাগানো হয়েছে বলে শেখাচ্ছে তাদের প্রকাশিত পাঠ‍্যপুস্তকে। 

এগুলো কি সত‍্যিই শিশুপাঠ‍্য? না সংকীর্ণ রাজনীতির কারনে বিশেষ কাউকে খুশী করতে করা হল? যত মানুষ এগুলো দেখে খুশী হয়েছে, আত্মপ্রমোদ লাভ করেছে, তার থেকে অনেক বেশি মানুষ কিন্তু হতাশ হয়েছে।

খুব সোজাসুজি সত্যিটা বলেছেন। আপনাকে ধন‍্যবাদ।"

----------------

Please  see oposts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Jai Hind!! Saroop Chattopadhyay.

Sunday, June 7, 2020

১৯৪৬ সালে কলকাতার ও বাংলার হিন্দুদের মুসলিমদের হাত থেকে রক্ষাকর্তা গোপাল মুখার্জী ওরফে গোপাল পাঁঠা সম্মন্ধে কিছু কথা।


চেনেন এনাকে?  কি বললেন... না। আপনার দোষ নয়। দোষ আমাদের ভাগ্যের।

ভারতমাতার এই সুসন্তানের নাম গোপাল মুখার্জী ওরফে গোপাল পাঁঠা। এই নামের কারন মেডিকাল কলেজের উল্টোদিকে কলেজস্ট্রীটে তার একটি বুচার শপ বা পাঁঠা কাটার দোকান ছিল। এখনো আছে সেই দোকান। অনুকূল মুখার্জীর পাঁঠা কাটার দোকান। 

এই গোপাল মুখার্জী ছিলেন বলে আপনি আছেন,  আমি আছি, হাওড়া ব্রিজ আছে, টালার ট্যাঙ্কি আছে, শিয়ালদহ স্টেশন আছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল আছে আর কলকাতায় বসে এক ইতিহাস অজ্ঞ হিন্দু মহিলা মাথায় হিজাব লাগিয়ে মাঝে মাঝে বড় বড় লেকচার দিতে পারছেন। 

কিভাবে?? 
পিছিয়ে যেতে হবে অনেকগুলো বছর। ১৯৪৬ সাল। অবিভক্ত বাংলা। দায়িত্ব পেয়েছে মুসলিম লিগ। মুখ্যমন্ত্রীর নাম সুরাবর্দী। তিনি জিন্নার লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তানকে সাকসেস করার জন্য এক কঠিন ষড়যন্ত্র আঁটলেন। ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে - ১৬ আগস্ট ভোরবেলা মুসলমানেরা ধর্মতলা চৌরঙ্গীতে একত্রিত হলেন।  শুরু হল হিন্দু কাটা। আল্লাহু আকবর শব্দে ভরে গেল চারিপাশ আর জ্বলতে থাকল  হিন্দুদের সম্পত্তি। রাজাবাজারে স্কুলের সামনে চারটি মেয়েকে রেপ করে মেরে উলঙ্গ করে লটকে দেয়া হয়েছিল। সেই বিভৎসতা যে দেখেছে সেই জানে। একই সাথে পূর্ববঙ্গের নোয়াখালিতে চলতে লাগল অত্যাচার। মহিলাদের গনধর্ষন,  শরীর থেকে মাংস খুবলে নেয়া। সারা দিন ধরে অজস্র ঘটনার থানায় কমপ্লেন জমা পড়ল কিন্তু পুলিশ কোন স্টেপ নিল না। এভাবে পার হয়ে গেল তিন তিনটা দিন।

পরিস্থিতি একই। হিন্দুর লাশে গোটা কলকাতা ভরে গেল।  বামপন্থী কিছু নেতা যারা পাকিস্তানের দাবিতে মুসলিম লিগের পাশে দাঁড়িয়েছিল ঘটনার আকস্মিকতায় তারাও স্তম্ভিত হয়ে গেল। না কোন বিজেপি বা আর এস এস এর পেছনে ছিল না। কংগ্রেসের তোষনের রাজনীতিই ছিল এর জন্য দায়ী। আর এই ঘটনা যখন ঘটছে তখন গান্ধী আর জহরলাল ঘাপটি মেরে চুপ করে বসে রইলেন। 

তিন দিন হিন্দু হত্যার পর ক্ষেপে গেল গোপাল। সে এমন এক অসম লড়াই লড়ল যে সুরাবর্দীর সমস্ত পরিকল্পনা বানচাল হয়ে গেল। গোপাল আগে থেকেই অরবিন্দের ভাবশিষ্য ছিল। সে ছিল নির্ভিক ডাকাবুকো। একাই দশজনার সাথে লড়ার মত পেটানো শরীর ছিল তার। ৪২ এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সে সামিল ছিল। তার কাছে বেশ কিছু অস্ত্র ছিল। কিছু পিস্তল, কিছু বোমা, কিছু সোর্ড। কিন্তু কখনো তা কোন ক্রিমিনাল অ্যাকটিভিটিস এ ব্যবহার করেনি বা করতে দেয়নি গোপাল। রডা কোম্পানীর বন্দুকের দোকান লুঠ করল গোপাল তার দলবলকে নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এদেশে আসা আমেরিকান সৈনিকদের  কাছ থেকে বোতল বোতল হুইস্কির বিনিময়ে আরো কিছু অস্ত্র জোগাড় করল গোপাল। তার পর একত্রিত করল প্রায় হাজারখানেক হিন্দু ও শিখ ছেলেকে। কিন্তু তাদের কয়েকটি কড়া নির্দেশ দিল। প্রথমত, অস্ত্রহীন মুসলমানকে মারবে না। উলটে সে প্রটেকশন চাইলে তাকে বা তার পরিবারকে প্রটেকশন দেবে। দ্বিতীয়ত মুসলিম মা বোনেদের দিকে মুখ তুলে তাকাবে না। কিন্তু অস্ত্রধারী মুসলমানকে ছাড়া চলবে না। ধড় থেকে তার মুন্ডু উপড়ানো চাই।

মাত্র দু তিন দিনে গোপালের বাহিনীর হাতে এত মুসলমান ঘাতক মরল যে সুরাবর্দীর দরবারে ত্রাহী ত্রাহী রব উঠে গেল। হরেন ঘোষ নামে এক গানের শিক্ষক ছিলেন যিনি সুরাবর্দির বাহিনীর কলকাতার মেজর পয়েন্টগুলো বোম চার্জ করে উড়িয়ে দেবার  ষড়যন্ত্র ধরে ফেললেন।  সুরাবর্দীর মেয়েকে তিনি গান শেখাতেন। সেখানে ছোট্ট মেয়েটি একটি কাগজ এনে হাজির করে। উনি প্রথমে বাজে কাগজ বলে মুড়ে ফেলে দেন পরে সেটা নিয়ে চুপ করে গোপালের কাছে তার বৌবাজারের বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেখানে হাওড়া ব্রিজ, টালার জল ট্যাঙ্ক, ভিক্টোরিয়া, শিয়ালদা স্টেশন কিভাবে বোম মেরে উড়িয়ে দেবে তার প্ল্যান করা ছিল। গোপালের বাহিনী প্রতিটি জায়গা থেকে হামলাকারীদের হঠিয়ে দিল। পুলিশ বেগতিক দেখে সেই জায়গাগুলোর দখল নিল। সুরাবর্দীর সন্দেহ  গিয়ে পড়ল  হরেন বাবুর উপর এবং তার প্রান গেল মুসলিম গুন্ডাদের হাতে। তার শরীর কেটে ছয় টুকড়ো করা হয়। 

কংগ্রেসী নেতারা এতদিন ঘাপটি মেরে ছিল। যেই মুসলমান মরা শুরু হল সেই সবাই বউয়ের আঁচলের তলা থেকে বেড়িয়ে এল। গান্ধী বেড়িয়ে এল শয্যাসঙ্গীনীদের ছেড়ে আর জহরলাল বেড়িয়ে এল এডুইনার বেডরুম ছেড়ে।

সবাই মিলে গোপালকে হাজির করল গান্ধীর সামনে। গান্ধী বললেন গোপাল আমার পায়ে তুমি অস্ত্র সমর্পন কর। গোপাল বলল এতদিন এত হিন্দু মরছিল আপনি ঘুমাচ্ছিলেন, আমি আপনার কথা রাখতে পারব না। অস্ত্র যদি জমা দিতে হয়, নেতাজী সুভাষের আসার কথা আছে, ওর পায়ে দেব আপনার পায়ে নয়।

বেগতিক দেখে গান্ধী নোয়াখালী পালালো। সুরাবর্দী তখন আপিলের নাটক শুরু করল যে দাঙ্গা বন্ধ কর সবাই ভাই ভাই। প্রশাসন কড়া হল। ধীরে ধীরে সব থামল।  বেঁচে গেল কলকাতা। কিন্তু নোয়াখালী বাঁচল না। কারন  সেখানে  কোন  গোপাল পাঁঠা ছিল না। এই মানুষটি ও বেঁচে ছিলেন ২০০৩ সাল পর্যন্ত। তাকে সমঝে চলতেন  বিধান রায় সিদ্ধার্থ রায়ের মত লোকও। 

একবার কলকাতা পুলিশ তাকে দুটো রুটের পারমিট দিতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, গোপাল মুখার্জী ঘুষ নেয় না। কেউ তাকে নিয়ে লেখে নি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মত অর্ধসত্যবাদী অর্ধেক জীবনধারী সাহিত্যিকদের কাছে আমরা আর কি আশা করতে পারি??

তাকে নিয়ে বায়োপিক ও হবে না। কিন্তু যতদিন হিন্দুস্তান থাকবে, বাংলায় হিন্দুর ভিটে থাকবে, কলকাতা হিন্দুশূন্য না হবে একটা আত্মা এখানে চিরকাল বিরাজ করবে। গোপাল মুখার্জী ওরফে গোপাল পাঁঠা। এই লেখার মাধ্যমে আমার ছোট্ট শ্রদ্ধার্ঘ্য এই মহান ভারত সন্তানকে।

সংগৃহিত-ডাঃ ঈশান ঘোষ পরিমার্জিত স্বরূপ চট্টোপাধ্যায়।


The Great Calcutta Killing সম্মন্ধে আরো বিশদ বিবরণ পেতে গেলে এই ব্লগের নিম্নে উল্লেখিত পোস্টটি পড়ুন:

গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং ১৯৪৬, ১৬ই আগষ্টের এর ইতিহাস। History of "The Great Calcutta Killing" which was started on 16thAug'1946
পড়ুন ~ Read:
http://mamatimanushofwb.blogspot.com/2020/08/history-of-great-calcutta-killing-which.html


Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post.
Thanks & Jai Hind! Saroop Chattopadhyay.

Tuesday, June 2, 2020

She Was Our Corona Super Hero, Don't Let Her Fade Away. নামটা মনে রেখো "সুনিতা", বয়েস কুড়ির মেয়েটি নার্স ছিল, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত মানুষের সেবা করে গেছে। #CovidWarrior #Nurse #RIP

কোনো নেতা মরে গেলে,অভিনেতা মরে গেলে শোকাতুর পোস্ট এর ঝড় বয়।

আর 29th মে আমফান ঝড়ের রাতে একটা নার্সিং অফিসার ডিউটি করতে করতে অসুস্থ হয়ে নিজেই শয্যাশায়ী রোগী হয়ে মারা গেলেও কেউ জানতে পারে না ।

সুনীতা মন্ডল, পেশায় সেবাব্রতী (নার্স) । মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কোভিড ওয়ারিওর । আমরা আমাদের আর এক সহযোদ্ধাকে হারালাম।

ব্যক্তিগত সূত্রের খবর---

PCOD ছিলো, সেদিন সাডেনলি পেটের ব্যথা আর প্রচন্ড বমি নিয়ে ভর্তি হয়। কোনো ফ্লুইড,ওষুধ কাজ করেনি, ইউরিন আউটপুট ভালো ছিলো না, প্রেসার 60/10 , kidney failure । MMCH এর CCU থেকে NRS আর SSKM এ রেফার করলেও বাড়ির লোক আনতে পারেনি , বেড নেই । কারন,এতবড় হাসপাতালে ক্যাচ না মারলে বেড পাওয়া যায় না ITU,CCU তে। পেশেন্ট নিজেই স্বাস্থ্যকর্মী হলেও এটা কোনো CATCH হতে পারেনা। catch হতে আমলাতন্ত্রী হতে হয়।

। শেষমেশ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ডাক্তারবাবু দেখেই জানান অবস্থা ভালো না, intubate করা হয়,2 বার dialysis করা হয়। কিন্তু সব বিফলে যায়। আর পরিবার ও পারছিলনা বেসরকারি হাসপাতালের খরচা বহন করতে ।

মাত্র দেরবছর এই প্রফেশন আশা, অনেক স্বপ্ন নিয়ে। আর কুড়িতেই ঝড়ে গেলো কুঁড়ি। কতটুকুই বা বয়স তার জীবন যার শুরু হলোনা মোটেই! অচিরেই নিভে গেল। ভীষন প্রাণবন্ত,সদা প্রাণোচ্ছল একটি মেয়ে, যে সারাক্ষণ কাজ কাজ কাজ আর কাজ করে মাথা খেত । অথচ কোনো ক্লান্তির ছাপ ছিল না তার সদা হাস্যময় মুখটিতে ।

এই সেদিন ও যে মেয়েটি সারা ওয়ার্ডময় ঘুরে ঘুরে রোগীকে সেলাইন চালিয়েছে,মেডিসিন খাইয়েছে ,ইজেক্শন দিয়েছে, জ্বর মেপেছে,সুগার-প্রেসার চেক করেছে,খাবার খাইয়েছে, কখন কাউকে এক ইশারায় গোল্লা পাকানো চোখ দেখিয়ে চুপ করিয়েছে, কারোর মাথায় হাত রেখে সেরে ওঠার তাকৎ জুগিয়েছে অন্যকে, সে নিজেই আজ চুপ,অচল ,অসাড়। নিজেই আর সেরে উঠতে পারল না । সে আর কোনো পেশেন্ট এর নাম আর বেড নাম্বার ধরে ছুটি নিয়ে যাও বলে ডাক দেবেনা । সে নিজেই ছুটি নিয়েছে যে চিরতরে।

সুনীতা তোমার অসুম্পূর্ণ লড়াই আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো। 

এই লড়াই আমরা জিতব। তুমি তোমার সহকর্মী সহযোদ্ধাদের মাঝেই বেঁচে থাকবে

তবে, আমি বলবো তুমি আবার ফিরে এসো আমাদের মাঝে, আমাদের সহযোদ্ধা হয়ে ।

ঈশ্বর তোমার আত্মা শান্তি দিক।

আমরা ও তোমার আত্মা শান্তি কামনা করি ।🙏


Written by Paromita Mitra in Facebook.


Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Vande Mataram!! Saroop Chattopadhyay.

ভারত চীন সম্পর্কের অবনতির একটা মূল কারণ: লাদাখ ও সিকিমের নতুন রাস্তা, ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে নতুন রাস্তাটা, ঠেকাতে মরিয়া চীন !

আর মাত্র ১৭-১৮ কিলোমিটার। ওইটুকু দূরত্ব জুড়ে নিতে পারলেই একেবারে কারাকোরাম পাসের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী।           

ঐতিহাসিক গিরিপথের ওপারেই ইয়ারকন্দ, কাশগড়, খোটান, শাহিদুল্লার মতো একের পর এক ঐতিহাসিক জনপদ। সুবিশাল শিনচিয়াং প্রদেশকে সুরক্ষিত  রাখতে এই জনপদগুলোর প্রত্যেকটা চীনের জন্য সাময়িকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ 

চওড়া এবং মসৃণ রাস্তা বানিয়ে ভারতীয় বাহিনী হু হু করে পৌঁছে যাবে সেই এলাকার দরজা পর্যন্ত, তা কি চীনের পক্ষে চুপচাপ মেনে নেওয়া সম্ভব! অতএব আবার পুরানো কৌশল। সীমান্ত উত্তপ্ত করে ভারতের কাজ আটকে দেওয়া। কিন্তু সে কৌশলে আর কাজ হচ্ছে না এবার। লাদাখ থেকে অন্তত তেমন খবরই আসছে।

মে মাসের শুরুর দিক থেকেই অশান্তি শুরু হয়েছিলো। প্রথমে লাদাখের প্যাংগং লেকের কাছে, তার পর উত্তর সিকিমের নাথুলা-তে। ১০ মে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম খবর পায় যে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অন্তত দু’টি এলাকায় মারামারি হাতাহাতি হয়েছে ভারতীয় ও চীনা বাহিনীর মধ্যে।

ধস্তাধস্তি, পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি, লাঠালাঠি এইসব। দু'পক্ষেই জখম হওয়ার খবর এসেছিল। তবে চীনা বাহিনীর অন্তত ১০০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উত্তর সিকিমের ওই সংঘর্ষের পরে, দাবি ভারতীয় সেনা সূত্রের।

১৯৬৭ সালের পর থেকে ভারত - চীন সীমান্তে গোলাগুলি চলার খবর প্রায় নেই বললেই চলে। সীমান্তে কাঁটাতার লাগাচ্ছিল ভারতীয় বাহিনী সেবার। বাধা দেয় চীন। ভারত বাধা মানেনি। রাইফেল থেকে গুলি চালায় চীনা বাহিনী। ভারতীয় সেনা লাইট মেশিন গান খুলে দেয়। চীন গুলি চালাতে শুরু করে হেভি মেশিন গান দিয়ে। ভারতীয় বাহিনী আর্টিলারি গান থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করে।

সে বারও দু’তরফেই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। আর সে বারের পর থেকে সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহার করার বিষয়ে দু'পক্ষেই অনেক বেশি সতর্ক হয়ে গিয়েছিল। তাই এলএসি বরাবর ভারত ও চীনের বাহিনীর মধ্যে যত সংঘাতের খবর আসে, সবই হাতাহাতি ও পাথর ছোড়াছুড়িতেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। এবারও তাতেই ইতি পড়তে পারত উত্তেজনায়। কিন্তু তা হলনা, উত্তেজনা আরও গড়িয়ে গেল।

কারণ চীনের টেনশন এবার অনেক বেশি। পরিস্থিতি ঠিক কেমন এখন লাদাখে??
নয়াদিল্লি এখনও সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং সেনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, দু’পক্ষই বড় সংখ্যায় বাহিনী পাঠিয়েছে এলএসি-তে।

বড় সংখ্যা বলতে কেমন? দু’তরফেই অন্তত গোটা একটা করে ব্রিগেড,অর্থাৎ প্রায় হাজার তিনেক করে মোতায়েন দু'পাশেই। খবর তেমনই। গলওয়ান উপত্যকাই সবচেয়ে উত্তপ্ত বলে খবর আসছে। সংঘর্ষ শুরু হয়নি। কিন্তু চীনা বাহিনী ওই অঞ্চলে একতরফাভাবে এগিয়েছে এবং শ’খানেক তাঁবু ফেলেছে বলে খবর।

পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ পর্যায়ের সামরিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। তারপর থেকে ভারতও দ্রুত বিপুল বাহিনী পাঠাতে শুরু করেছে গলওয়ান উপত্যকায়।
চীনা বাহিনীর প্রায় মুখোমুখি অবস্থানে তাদের চেয়েও বেশি সংখ্যক সেনা ভারত ইতিমধ্যেই মোতায়েন করে দিয়েছে।
গলওয়ানে আচমকা গজিয়ে উঠা চীনা শিবিরকে ভারত ইতিমধ্যেই তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে বলেও খবর।

তবে উত্তাপ শুধুমাত্র গলওয়ান উপত্যকায় সীমাবদ্ধ নয় বলেও ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ দাবি। প্যাংগং লেকের উত্তরে হট স্প্রিং এলাকায় এবং ডেমচকেও পরিস্থিতি তপ্ত বলে তারাও জানিয়েছেন। সর্বত্রই বাহিনী হাজির হয়েছে দু’তরফ থেকে।

২০১৭ সালে ভুটান চীন সীমান্তের ডোকলামেও কিন্তু পরিস্থিতি এরকম হয়েছিল। ভুটানের সাথেও সীমান্ত নিয়ে বিবাদ রয়েছে চীনের। একতরফাভাবে বিতর্কিত এলাকার মধ্যে দিয়ে রাস্তা তৈরির চেষ্টা করছিল চীন। ভুটানের পক্ষে বাধা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই বাহিনী পাঠিয়ে দিয়েছিল ভারত।

৭৩ দিন পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল দুই বাহিনী। এবারের সংঘাত ততটাও দীর্ঘায়িত হইনি। তবে এবারে অনেক বড়ো এলাকা জুড়ে উত্তেজনাটা তৈরি হয়েছে। এবার বাহিনীর আকারটাও ডোকলামের তুলনায় অনেক বড়।

কর্নেল সৌমিত্র রায়ের কথায় "আকসাই চীনের সঙ্গে লাদাখের যে সীমানা, সেই সীমানা বরাবর লম্বা রাস্তা বানিয়েছে ভারত। লেহ্ থেকে রাস্তাটা শুরু হয়। কিছুটা দক্ষিণ- পূর্ব গিয়ে দারবুক থেকে বাঁক নেয় এলএসি -র দিকে অর্থাৎ পূর্ব দিকে। তার পর এলএসি র গা ঘেঁষে একটানা ছুটতে থাকে উত্তর দিকে। শিয়ক হয়ে দৌলত বেগ অলদি গিয়ে রাস্তাটা থামে।

ওই রাস্তাটাকেই চীন ভয় পাচ্ছে।
কেন ভয় পাচ্ছে?

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্তার ব্যাখ্যা "সীমান্তে ভারত ভালো রাস্তাঘাট এবং ভালো পরিকাঠামো বানাক, এটা চীন কখনও চায়না। সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারত উন্নয়নের কাজ করুক, এটাও চীন চায়না। কারণ সীমান্তে উন্নত পরিকাঠামো থাকলে ভারতীয় বাহিনীর পক্ষে ওইসব এলাকায় মসৃণ ভাবে যাতায়াত এবং নজরদারি চালানো সম্ভব।"

নিজের সীমান্তে ভারতীয় বাহিনী যাতায়াত করুক বা নজরদারি চালাক, তাতে চীনের বলার কী থাকতে পারে? 

কর্ণেল রায় বলেছেন "আইনত চীনের কিছুই বলার নেই। কিন্তু আইন ভেঙেই বার বার চীন নাক গলাত। ভারতও তা মেনে নিত। এক সময় চীন আপত্তি করলেই ভারত কাজ থামিয়ে দিত। তাই নাক গলানোকে অভ্যাসে পরিণত করেছিল চীন। 

কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চীনের আপত্তি উড়িয়েই কাজ চালাতে শুরু করে ভারত। পূর্বে অরুণাচল থেকে উওরে লাদাখ পর্যন্ত প্রায় সর্বত্রই বড় বড় রাস্তা, সেতু, বিমানঘাঁটি এবং সামরিক পরিকাঠামো ভারত তৈরি করেছে এই সময়টায়। চীন সেসব আটকে রাখতে পারেনি। বরং ডোকলামে চীন যে রাস্তা তৈরি করেছিল, সেটাকেই আটকে দিয়েছিল ভারত।

পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে, লাদাখের যে কোনও অংশ থেকে তো বটেই, জম্মু কাশ্মীর এবং হিমাচলপ্রদেশ থেকেও যখন তখন হু হু করে পৌছে যাওয়া যাবে আকসাই চীনের সীমানায়। আরও একটু রাস্তা তৈরি হলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে আরও উওরে একেবারে কারাকোরাম পাসের বেস পর্যন্ত। সেটা চীনের পক্ষে খুব অস্বস্তিকর।"

কারাকোরাম পাসের বেস পর্যন্ত ভারত রাস্তা বানিয়ে ফেললে তা চীনের জন্য অস্বস্তিকর কেন? ??

লাদাখে যে সেনা কর্মকর্তারা কাজ করে এসেছেন, তাঁরা বলছেন, কারাকোরাম পাস কৌশলগত বা সামরিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিয়াচেনের উত্তর পূর্ব কোনায় ৫ হাজার ৫৪০ মিটার উচ্চতায় কারাকোরাম পাসের অবস্থান।

প্রগৈতিহাসিক যুগ থেকে ওই গিরিপথ ব্যাবহৃত হয়ে আসছে লাদাখের লেহ্ থেকে তারিম উপত্যকার ইয়ারকন্দের মধ্যে যাতায়াতের জন্য। তারিম উপত্যকা তথা ইয়ারকন্দ এখন চীনের শাসনাধীন। আর লেহ্ তথা লাদাখ ভারতের অংশ।

তাই আগের সেই অবাধ যাতায়াত বহু যুগ ধরেই বন্ধ। কিন্তু সীমান্তে যদি কখনও পরিস্থিতির অবনতি, তা হলে ওই গিরিপথ ব্যাবহার করে হানাদারির চেষ্টা চালাতে পারে দু'পক্ষই।

কারাকোরাম পাসের উওরে অর্থাৎ চীনা এলাকায় রাস্তা ঘাট এবং পরিকাঠামো অনেক দিন আগেই উন্নত করেদিয়েছে চীন। কিন্তু পাসের দক্ষিণে ভারতের পরিকাঠামো এতদিন অনুন্নতই ছিল। ফলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভারত চাইলেই কারাকোরামের গিরিপথ দিয়ে হানা দিতে পারবে না, কিন্তু চীন চাইলেই ওই গিরিপথ দিয়ে দক্ষিণে চলে আসতে পারবে- এই ভাবনা স্বস্তি দিত বেজিংকে।

ভারতের নতুন রাস্তা, বেজিঙের সেই স্বস্তি গায়েব করে দিয়েছে বলে ভারতীয় সমর বিশারদদের মত।

দারবুক থেকে দৌলত বেগ অলদি পর্যন্ত ২৫৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শেষ, জানাচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ওই রাস্তায় একাধিক সেতু বানাতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় যে সেতু, সেটা তৈরি হয়েছে শিয়ক নদীর উপরে। ২০১৯ এর অক্টোবরে সেই সেতুর উদ্বোধন বেশ ঢাকঢোল পিটিয়েই করেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী  রাজনাথ সিংহ।

দৌলত বেগ অলদিতে ভারত বিমানঘাঁটিও বানিয়ে ফেলেছে আগেই। এবার দৌলত বেগ অলদি থেকে কারাকোরাম পাস পর্যন্ত ১৭-১৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করে ফেললেই চীনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলার তোড়জোড় সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। অনেকরকম ভাবেই এই কাজকে আটকানোর চেষ্টা করেছিল চীন। পারেনি। এবার তাই মরিয়া হয়ে কামড় দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে। 

জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) বেদপ্রকাশ মালিক থেকে জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জে জে সিংহ, প্রত্যেকেই এইরকম মনে করছেন।

কার্গিল যুদ্ধের সময়ে ভারতের সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল মালিক। তিনি বলছেন, ভূপ্রাকৃতিক কারণে এলএসি-র এপাশে অর্থাৎ লাদাখে সেনা পাঠানো ভারতের পক্ষে যতটা সহজ, এলএসি-র ওপাশে অর্থাৎ তিব্বতের দিকে ততটা সহজ নয়।

চীন ওই সব অঞ্চলে সড়ক পরিকাঠামো বাড়িয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিপুল সংখ্যক সেনা নিয়ে এসে এলএসি বরাবর ঘাঁটি গেড়ে থাকা চীনের পক্ষে অপেক্ষাকৃত কঠিন বলে তার মত। ভারতের ক্ষেত্রে সেই অসুবিধা নেই।

ওই সব অঞ্চলে বড় বাহিনী মোতায়েন রাখা ভারতের পক্ষে খুব একটা কঠিন কোনকালেই ছিলনা, সমস্যা ছিল শুধু যাতায়াতের, সেটাও ভারত ক্রমশ মিটিয়ে ফেলেছে, সুতারাং চাপে পড়া চীনের পক্ষে স্বাভাবিক - ব্যাখ্যা জেনারেল মালিকের।

ভূপ্রাকৃতিক দিক থেকে ভারতের জন্য দুর্বল বিন্দু ছিল শুধুমাত্র কারাকোরাম পাস। আর চীনের জন্য সুবিধাজনক বিন্দুও ছিল ওটাই। কারণ কারাকোরাম পাসের ঠিক দক্ষিণে লাদাখের যে অংশ, সে এলাকা এতই জনবিরল এবং মরুভূমি সদৃশ যে, বাহিনী মোতায়েন রাখার পক্ষে ওই এলাকা মোটেও অনুকূল ছিল না।

কিন্তু কারাকোরাম পাসের উওরে তারিম অববাহিকা বা কারকাশ উপত্যকার ভূপ্রকৃতি এবং আবহাওয়া অনেকটাই সহনীয়। ওই অঞ্চলে বাহিনী রাখা বা ওই অঞ্চল দিয়ে তাড়াতাড়ি কারাকোরাম পাস পেরিয়ে আসা অপেক্ষাকৃতভাবে সহজ। নিজেদের জন্য এই সুবিধাজনক পরিস্থিতিটা কোনও ভাবে বদলে যাক, তা চীন চাইনি।

কিন্তু দৌলত বেগ অলদি পর্যন্ত রাস্তা বানিয়ে, যোগাযোগ ও অন্যান্য পরিকাঠামোর অনেকটাই উন্নতি ঘটিয়ে ভারত সেই পরিস্থিতি বদলে দিল। কারাকোরাম পাস পর্যন্ত পৌছানোর জন্য শেষ ১৭-১৮ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে যাওয়ার আগেই তাই একটা শেষ চেষ্টা করতে নেমেছে চীন। বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

কাজ কিন্তু বন্ধ করেনি ভারত। সীমান্তে উত্তাপ অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে। কিন্তু যে কাজ চলছিল, বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন তা চালিয়ে যাচ্ছে বলেই জানা যাচ্ছে।

ডোকলাম সঙ্ঘাতের সময়ে ভারতীয় সেনার ইস্টার্নকমান্ড-র প্রধান ছিলেন যিনি, সেই এলটি জেনারেল(অবসরপ্রাপ্ত)অভয় কৃষ্ণ -র কথায় "চীনকে মাঝেমধ্যে একটা রেড লাইন দেখিয়ে দেওয়ার দরকার হয়। লাদাখে আমাদের বাহিনী সেটাই করছে। ডোকলামেও চীন বাড়াবাড়ি করছিল। আমরা রেড লাইন টেনে দিয়েছিলাম ওদের সামনে। চীন বুঝে গিয়েছিল, আর এগোলে ভারত কিছু একটা করবে। লাদাখেও ঠিক সেই বার্তাটাই চীনকে দেওয়া হচ্ছে।"

সংগৃহীত
Via WhatsApp, edited by me.


Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Vande Mataram!! Saroop Chattopadhyay.

Some recent posts

ভগবান রামচন্দ্র (রঘুবীর) ও ঠাকুর শ্রী রামকষ্ণ পরমহংস দেব, আর বর্তমানের সেক্যুলার (আসলে সিক কুলার) গণ।

শ্রীরামকৃষ্ণের কুলদেবতা ছিলেন ৺রঘুবীর। তিনি নিজে  দেবতার কবচ পরতেন, তাঁর পার্থিব শরীর পঞ্চভূতে লয় হওয়ার পরবর্তী সময়ে শ্রীমা সেই পবিত্র কব...