Tuesday, August 25, 2020

অপারেশন এর রুমকে 'অপারেশন থিয়েটার' বলা হয় কেনো? Why Operation Rooms are called as "Operation Theatre"?

কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে, অপারেশন এর রুমকে 'অপারেশন থিয়েটার' বলা হয় কেনো?

আসলে আগেকার যুগের অপারেশন রুমগুলো রীতিমতো থিয়েটারের মতো করেই বানানো হতো! বড় একটা গ্যালারি থাকত রুমের চারপাশ ঘিরে যেখানে দর্শকরাও থাকতো!
এটি একটি ঐতিহাসিক ছবি যেটা ১৯৪৫ সালে তোলা হয়েছে। ছবিটা দেখলেই বুঝতে পারবেন যে নিচে একটি অপারেশন হচ্ছে, আর ওপরে ব্যলকনিতে ছাত্র ও নার্স পর্যবেক্ষণ করছে (থিয়েটারে সিনেমা দেখার মত)। এই জন্যেই অপারেশন রুমকে আমরা এখনও অপারেশন থিয়েটার বলি।

সংগৃহীত

Monday, August 24, 2020

ভারতবর্ষে দাঙ্গার অধিকার কাদের?সেটাও কি সিক-কুলার রা ঠিক করবেন?In India who are having right to conduct communal clashes?

লেখাটি ২৪ শে আগস্ট এর 'স্বস্তিকা' তে প্রকাশিত হয়েছে। 
লেখিকা ~ দেবযানী হালদার
সূত্র: স্বস্তিকা

সন্ধ্যা সাতটা বেঙ্গালুরু। জন্মাষ্টমীর সন্ধ্যা। সিলিকন ভ্যালিতে শান্তির পরিবেশ। হঠাৎ রাস্তায় উন্মত্ত জনতা 'আল্লাহু আকবর' আর 'নারা এ তকবীর' এ উথালপাথাল হয়ে গেল শান্তির বাতাবরণ। ভেঙ্গে পুড়িয়ে ফেলা হলো দলিত কংগ্রেস বিধায়ক অখণ্ড শ্রীনিবাস মূর্তির বাংলো। আক্রান্ত হল থানা ও পুলিশ। জ্বালিয়ে দেওয়া হলো অসংখ্য গাড়ি। থানা তছনছ হয়ে গেল যা আইন রক্ষাকারীদের জায়গা।

কারণ: একটা ফেসবুক পোস্ট। এক শান্তির ছেলে বশীর আদিয়ার বশীর প্রথমে হিন্দু দেবী লক্ষ্মী ও তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর 'মর্ফড পিকচার' পোস্ট করেছিল। সেই ফটো অত্যন্ত আপত্তিকর ছিল। পোস্ট কন্নড় ভাষায় বিখ্যাত ভজন 'ভাগ্যদা লক্ষ্মী বড়াম্মা' সহ ছিল। এই ভজন অন্যান্য অনেক শিল্পী সহ বিখ্যাত ধ্রুপদী সঙ্গীত শিল্পী ভীমসেন যোশীও গেয়েছেন। এই পোস্টের কমেন্টে কংগ্রেস বিধায়ক অখণ্ড শ্রীনিবাস মূর্তির ভাগ্নে নবীন একটি ফটো কমেন্ট পোস্ট করে যা মহম্মদ সম্বন্ধীয়। পোস্টে মহম্মদ ও আয়েশার ফটো দেখানো হয়। মহম্মদ সম্বন্ধে কোন ফটো ইসলাম বিরুদ্ধ। 

পরিণতি: কেজি হাল্লি ও ডিজি থাল্লি থানা আক্রমণ করে ক্ষুব্ধ সম্প্রদায়। দলিত বিধায়কের বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হয় প্রথমে। তারপর আগুন লাগানো হয়। দমকল সাহায্য করতে এলে তাদের গাড়িও পোড়ানো হয়। এই ঘটনায় ৩ জন মৃত। ১০০ জন আহত। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশও আছে। কর্ণাটকের মন্ত্রী এ. অশোকের বিবৃতি অনুযায়ী ডিসিপিকে বন্দী করে রাখা হয়। তার গাড়িতে আগুন লাগানো হয়।‌ এমনকি পুলিশ কোয়ার্টারেও আক্রমণ করা হয়। রাস্তা অবরোধ করা হয়। পাথর ছোঁড়া হয় যথেচ্ছ। আশেপাশে প্রচুর গাড়িতে আগুন লাগানো হয়।

কিছু প্রশ্ন: 

*এই ঘটনা কি নিছক এক দিনের আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ? 
*একটা ফেসবুক পোস্টের জন্য কোন পুলিশ প্রশাসনের উপর ভরসা না করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? 
*হঠাৎ করে এত এত লোকজন এত কম সময়ের নোটিশে জোগাড় করা কতটা সম্ভব? 
*সাইবার পুলিশে কমপ্লেন করে তার আইনি ব্যবস্থার জন্য অপেক্ষা করা হলো না কেন? 
*কেন এই সম্প্রদায়ের দেশের আইনের উপর বিশ্বাস নেই? 
*নিজেদের ধর্ম রক্ষার নামে জাতীয় সম্পত্তি বা মানুষের ক্ষতি করার অধিকার কোন সংবিধান দিয়েছে? 
*এত এত লোককে এত তাড়াতাড়ি জড়ো কারা করলো? 
*এত লোকজন সবার হাতে লোহার রড থেকে অস্ত্রশস্ত্র, পাথর কারা সরবরাহ করলো? 
*এই অস্ত্রশস্ত্রের টাকা কে দিলো? সেই টাকা এলো কি ভাবে?
*কোন অথোরিটির সঙ্গে কথা না বলে ডাইরেক্ট অ্যাকশন কেন হলো? 
*হিন্দু সম্প্রদায়কে আঘাত করতে পোস্ট করেছিল বশীর আদয়ার বশীর, তার বিরুদ্ধে এরা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল?
*দলিত বিধায়ককে আক্রমণ করা হলে দলিত মুসলিম ঐক্যের বাজনা কে বাজাবে?
*কংগ্রেস নিজের বিধায়ক না মুসলিম কার পক্ষ নিয়েছে?
*বেছে বেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে হলে তার ব্যাখ্যা আলাদা হয় কেন?
*কংগ্রেস বিধায়কের ভাগ্না হঠাৎ এই পোস্ট করল কি কারোর থেকে নির্দেশ পেয়ে?
*সাধুদের পিটিয়ে যখন মারা হয়েছিল, হিন্দু সম্প্রদায় কাউকে আঘাত করলে কি ভাবে তার বিশ্লেষণ করা হতো?

না, এদের কোন যথাযথ উত্তর অফিসিয়ালি এখনও পাওয়া যায় নি, হয়ত যাবেও না। এরকমটাই এদেশে হয়ে আসা দস্তুর। এটাই ইতিহাস, এটাই ভবিষ্যত। ওদের ধর্মানুভূতি বজায় রাখার দায়িত্ব ওদের, আইনেরও নয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা শুধু মাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য যারা আইন মেনে চলে। আর যারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলেছে বরাবর, তারা অবশ্য কখনও দাঙ্গার দায়িত্ব নেয় নি।

অন্য ধর্মের প্রতি এত বিদ্বেষ, এত ঘৃণা নিয়ে এরা দিল্লী থেকে বেঙ্গালুরু, যে কোন শহরে অনায়াসে দাঙ্গা লাগিয়ে দেয়। ১০ ই জানুয়ারি 'টাইমস নাউ' চ্যানেলে একটি ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে যাতে রাম মন্দির নির্মাণের বদলা হিসেবে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। ওরা পৃথক 'মুসলিম স্টেট' দাবী করছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী যাতে স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে না পারেন, তার প্রচেষ্টা চলছে সর্বতোভাবে। মুসলিম ভাই বোনদের আহ্বান জানানো হয়েছে এর উদ্দেশ্যে। ওই দিন রাত্রে ১০:৪৫ নাগাদ সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে লেনদেনের ছবি। ফান্ডিং তো আছেই, কেরলের গোল্ড স্মাগলিং মনে করিয়ে দেয় অনেক কিছু। প্রশ্ন অনেক, উত্তর নেই।

১১ ও ১২ আগস্টের মাঝখানের রাত দুটোর সময় কংগ্রেসের ন্যাশনাল সেক্রেটারি ও আইটি ইন চার্জ জাকিয়া খান একটি ভিডিও পোস্ট করে। যাতে দেখা যায় একটি মন্দিরের বাইরে মুসলিম ছেলেরা মানববন্ধন করে মন্দিরটিকে বাঁচানোর জন্য শৃংখলাবদ্ধ হয় দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে তাড়াতাড়ি আপলোড করার কথা পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে। অর্থাৎ যা হয়েছে সবটাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এমন ঘটনা আমরা আগে দেখেছি দিল্লির দাঙ্গা, অ্যান্টি সিএএ আন্দোলনের সময়। এমন মানববন্ধন কিছু নতুন নয়। অভিনব তো মোটেই নয়। যারা সন্ধ্যেবেলায় এমন তছনছ করল পুরো শহর, পুলিশ ও তাদের পরিবারের আর্তনাদ যাদের মধ্যে একটুও দয়ামায়া তৈরি করে নি, যারা এটিএম থেকে গাড়ি, ভাঙচুর করেছে সব। পুলিশকে ধাওয়া করে বেসমেন্টেও চড়াও হয়েছে, যাদের জন্য শান্ত একটা শহরে কারফিউ জারি হয়ে গেল, তারা হঠাৎ করে একটা মন্দিরের বাইরে মানববন্ধন করে তাকে বাঁচানোর ভিডিও শুধু ভাইরাল হলো। আবার বাঁচাবে তাদের সম্প্রদায়ের হাত থেকেই। মন্দির হিন্দু ভাঙ্গবে না। শুধু তাই নয়, প্রতিটা নিউজে তাদের ধর্মের উল্লেখ পরিষ্কার ভাবে করে দেওয়া হল। অথচ কারা মেরেছিল, কারা প্রথম পোস্ট করেছিলো, না তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, না তাদের ধর্ম প্রকাশ করা হয়েছে। এই ঘটনায় যারপরনাই উৎফুল্ল হয়েছে লিবারেল আর সেকুলর গোষ্ঠী। মানববন্ধনের জয়গাথা গাইতে গিয়ে হ্যাজের পর হ্যাজ নেমে গেছে। অথচ দাঙ্গার জন্য ন্যূনতম নিন্দাসূচক একটা বাক্য খরচ করে নি। 

বেঙ্গালুরুর মানববন্ধনের আগে আরও মানববন্ধন হয়েছে। 

প্রথম ঘটনা: এই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লীতে দাঙ্গার সময় মুসলিমরা মন্দির বাঁচাতে এমনি এক মানববন্ধন তৈরি করেছিল। তাদের ভয় ছিল যে পাছে হিন্দুরা নিজেরাই নিজেদের মন্দির ভেঙ্গে মুসলিমদের দায়ী করে।

দ্বিতীয় ঘটনা: জানুয়ারি, ২০২০ সালে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টে যারা শরণার্থী তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সেখানে অনুপ্রবেশকারী যারা তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এই আইনের ভুল ব্যাখ্যা করে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন দিল্লীর শাহিনবাগে প্রতিবাদের নামে দেশের রাজধানীর জীবন স্তব্ধ করে দেয়। এই প্রতিবাদ চলাকালীন এক আম আদমী পার্টির সমর্থক গুলি চালালে মুসলিম মহিলারা মানববন্ধন তৈরি করেছিল।

মিডিয়া হিন্দু এলাকায় এদের খাবার সরবরাহ করা, কোথাও হিন্দু বিধবাকে বাঁচানো, কোথাও মন্দির ভাঙ্গার পর মূর্তির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার খবর ফলাও করে প্রকাশ করে। কিন্তু ওই খাবার সরবরাহ করার কারণ যে দাঙ্গা সেটা ওই মুসলমান সম্প্রদায় করেছিল, কেউ বলে না। মন্দির ভাঙ্গার খবর বেরোলেও কারা ভেঙ্গেছিল সেই ধর্ম পাওয়া যায় না কোন ময়নাতদন্তে। কিন্তু মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার সময় ধর্মের উল্লেখ থাকে পরিষ্কার হরফে। দিল্লীর দাঙ্গার সময় মুসলিমরা দায়ি এই কথা না লিখলেও কত দয়ালু মুসলিম যে কত হিন্দুর প্রাণ বাঁচিয়েছে 'মসিহা' হয়েছে, সে খবরের প্রচার চলেছে জোর কদমে।

কোন মিডিয়া প্রথম ফেসবুক পোস্টে হিন্দুধর্ম ও প্রধানমন্ত্রীর ঘৃণ্য যে ভুয়ো ফটো পোস্ট হয়েছিল, তার উল্লেখ পর্যন্ত করে নি। নিজেদের বেলায় ফেসবুক পোস্টে এরা নিজেদের কাজকে জাস্টিফাই করে আর অন্যদেরকে আক্রমণ করে নিজেরা ভিকটিম সাজে। আর অন্যদের বেলায় চুপ থাকে। প্রথম যখন পোস্ট হল তখন প্রধানমন্ত্রীর গরিমা, হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতির জন্য কারোর কাছে কোন মূল্য ছিল না। এরা নিজেদের বেলায় এত রিজিড কিন্তু অন্যের বেলায় নীরব, 'নিজের বেলায় দাঁতকপাটি, পরের বেলায় আঁটি শুঁটি'। আইনি প্রক্রিয়ার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ অপেক্ষা করতে পারে, সংখ্যালঘু হলে 'নারা এ তকবীর' বলে নিজেদের হাতে আইন তুলে নেবার এই দ্বিচারিতার অধিকার দেওয়া হয়েছে যেন। তারা তাদের ধর্ম রক্ষা করবার জন্য সমাজকে আক্রমণ করতে পারে, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করতে পারে, লুট করতে পারে, দাঙ্গা করতে পারে, আগুন জ্বালাতে পারে, দেশে অস্থির পরিবেশ তৈরি করতে পারে। সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার যেখানে সুস্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে এই দেশের সমস্ত নাগরিক তাদের ধর্ম পালন করতে পারবে। কিন্তু সেটা শুধু এদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। কমলেশ তিওয়ারির সময় দুই লক্ষ সাম্প্রদায়িক লোক বেরিয়েছিল ধর্ম রক্ষার্থে, তারপর কালিয়াচকের দাঙ্গা। অ্যান্টি সিএএ আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি এই দেশে থাকবার জন্য তারা দু'মাস ধরে রাজধানী অচল করে রেখে দিল যদিও আইনের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কমলেশ তিওয়ারিকে বাঁচানো পর্যন্ত গেল না। অঙ্কিত, সেই দিল্লীর দাঙ্গা, বাঁচে নি সেও। এদিকে সাধুদের পিটিয়ে মেরে ফেললেও আমরা দুদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট করার পর ভুলে যাই। জম্মুর এক অখ্যাত কাঠুয়ার এক মন্দিরে আসিফা নামে একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলে কত সহজে সমগ্র হিন্দু সমাজ, মন্দির সবাইকে ধর্ষক বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। 'হিন্দু সন্ত্রাস' বলে একটা অধ্যায় শুরু হয়েছিল মালেগাঁও ব্লাস্টের মিথ্যা ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুধু হিন্দু যাতে বদনাম হয়। যে কোন মিডিয়ায় মুসলিম দাঙ্গাকারীর নাম থাকে না, হিন্দু হলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু মানববন্ধন হলে সেখানে মুসলিম উল্লেখ করা হয়, খুব সচেতন ভাবে।

এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে, ছোটবেলায় রিফ্যুজি কলোনি থেকে কেউ এলেই গল্পের বিষয় হতো, "ওঃ ভাগ্যিস আমাদের রহমত, জুবের ছিল, তাই প্রাণ হাতে করে ইণ্ডিয়া চলে আসতে পেরেছিলাম সবাই।" যেন যারা তাড়িয়েছিল তাদের নাম 'রাম, শ্যাম, যদু' ছিল‌। স্বীকার করে নাও, রহিম তাড়িয়েছিল, রহমত রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পার করিয়ে দিয়েছিল। আসলে সবটাই অধিকারের খেলা, কখনো ধর্মের অধিকার, কখনো ধর্মরক্ষার অধিকার, কখনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষার অধিকার। আর এই করতে করতে কখন যে 'দাঙ্গার অধিকার' পেয়ে যায়, আমরা জানতেই পারি না।

আমাদের এই সব মানববন্ধন চাই না। আমাদের মন্দির বাঁচানোর কোন দরকার নেই। মন্দির ওদের নয় আমাদের 'আমানত'। মন্দির ভাঙ্গছে যারা তাদের এই সব বুজরুকি না করে বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধ করার দিকে নজর দিক, মন্দির ভাঙ্গার মত পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না। এই দেশে দাঙ্গার অধিকার যার, মানববন্ধন নামে মন্দির বাঁচানোর ভণ্ডামি তাদের না করাই ভাল। নিজেদের ইমেজ ঠিক করতে মানববন্ধনের গল্প না তৈরি করে পাথর ছোঁড়া থেকে বিরত হলেই দেশে প্রকৃত শান্তি বজায় থাকবে। একপক্ষ সবসময় আগুন জ্বালাবে আর আরেক পক্ষ শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটা কোন কাজের কথা নয়। হয় মানসিকতার পরিবর্তন হোক, নাহলে এইসব মানববন্ধন নামে নাটকের পটকথা তৈরি বন্ধ হোক। দাঙ্গার অধিকার যার, দাঙ্গার দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে।


 Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Jai Hind 🇮🇳!! Saroop Chattopadhyay.

Sunday, August 23, 2020

'রাষ্ট্রপুঞ্জের' সম্মান এবং তার সত্যতা যাচাই।— এক মিথ্যাচারের পর্দাফাঁস। "লজ্জা হওয়া দরকার"!!


দিন তিনেক আগে একটি রাজনৈতিক দল একটা খবর প্রচার করে যে তাদের দলের এমএলএ এবং পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী ডাঃ নির্মল মাঝি( করোনাযোদ্ধা (Covid Warrior) হিসেবে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের জন্য জাপানে অবস্থিত একটি রাষ্ট্রপুঞ্জের সহযোগী এনজিও UNWPA দ্বারা সম্মান পেতে চলেছেন। এই খবরটি রাজ্যের শাসকদলের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে নির্ভীকচিত্তে টুইট ও করা হয়। এমনকি টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ডেকান হেরাল্ডের মত সংবাদপত্র এই খবরটি পরিবেশন করে।

এই খবরটার পরিপেক্ষিতে এক রাজনৈতিক দল প্রচার করতে থাকে যে পশ্চিমবঙ্গের করোনা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এবং মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃত হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক মহলে এই নিয়ে একটু ক্ষোভ দেখা যায়, কারণ কিছু চিকিৎসক এর বক্তব্য যারা এই মহামারিতে ফ্রন্টলাইনে থেকে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা স্বীকৃতি পাচ্ছেন না কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবে কেউ সেই স্বীকৃতি অর্জন করছে।

প্রথমে বঙ্গের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে খুশি হই আমরাও। কিন্তু তথাকথিত 'রাষ্ট্রপুঞ্জের সহযোগী সংস্থার' পাঠানো চিঠিতে এমন কয়েকটি ভুল ধরা পরে যে সেটির সত্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে যায়। এরপর OPINDIA এই চিঠির ব্যাপারে একটু তলিয়ে দেখে। এবং তাতে ধরা পরে বিস্ফোরক সব তথ্য, ধরা পরে বিশাল মিথ্যাচার।

প্রথমত, United Nation World Peace Association(UNWPA) যে চিঠিটা পাঠায় সেটা তাতে তারা পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী কে সম্মোধন করে। কিন্তু এটা যেহেতু পশ্চিমবঙ্গের করোনাযোদ্ধার স্বীকৃতি হিসাবে চিঠি, তাই সেটা মুখ্যমন্ত্রী বা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দেওয়া ই যুক্তিযুক্ত, কিন্তু তার বদলে দেওয়া হল কিনা শ্রমমন্ত্রী কে!

দ্বিতীয়তঃ, ওই চিঠির ইংরেজি। চিঠির অর্ধেক ইংরেজি লেখার সঠিক কোনো মানেই হয় না! এবং প্রচুর sentence এ অভাবনীয় সব grammatical mistake! চিঠির কয়েকটা লাইন উল্লেখ করলাম :- 'Men are feckless and trying to set back back in their normalize life' এবং 'We are the world family gravely effected due to this outbreak and watching helpless human face daily. During this in nut shell human are in frightful situation'— এই বাক্য গুলির মানে কি? গ্রামারের অবস্থাও করুন! তারপর চিঠির শেষে উল্লেখ করা 'your kingdom'! পশ্চিমবঙ্গ কবে থেকে আলাদা 'Kingdom' হয়ে গেল? একটা আন্তর্জাতিক সংস্থার চিঠিতে এরকম ভুল কখনো হতে পারে কি?!

তৃতীয়তঃ, UN এর Full Form হল ''United Nations''. কিন্তু চিঠিতে UN মানে হয়ে গেছে United Nation! রাষ্ট্রপুঞ্জের সহযোগী সংস্থা রাষ্ট্রপুঞ্জের নামই ভুল বলছে!

এবার আসা যাক UN এর সহযোগী এনজিও এর ব্যাপারে। PTI এর দাবি অনুসারে  UN এর সহযোগী সংস্থা টি UN Department of Economic and Social Affairs civil society তে রেজিস্ট্রার্ড। 

তবে একটু তলিয়ে দেখলে এই সংস্থার সম্পর্কেও ভুল এবং বিশাল মিথ্যাচার ধরা পরেছে।
এক, UN(রাষ্ট্রপুঞ্জ) এবং এই NGO এর  প্রতীকের মধ্যে অদ্ভুত সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। UNWPA এর লোগো তৈরি হয়েছে UN এর লোগো এর সাথে একটি পাখি ও জাপানী চেরি এর ছবি যুক্ত করে! এরকম অদ্ভুত সাদৃশ্যের কারণ কি? মানুষকে বিভ্রান্ত করা?!

দুই, সংগঠন এর নামে United Nation কথা উল্লেখ রয়েছে, United Nations নয়!!! এই সামান্য অক্ষরের পার্থক্য অনেকের চোখে না পরলেও এটা এক মারাত্মক পর্যায়ের জালিয়াতির প্রমান। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাথে সংস্থার কোন সম্পর্কই নেই।

তিন, 'তথাকথিত' এই UN সহযোগী সংস্থার registration number, affiliation number এবং অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক নেই। যা প্রমান করে এই সংস্থা ভুয়ো ও জালিয়াতির উদ্দেশ্যেই বানানো। এবং এই সংস্থার ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক বেশিরভাগ ই বৈধ নয় এবং তাদের উল্লিখিত টুইটার লিঙ্কের  (@UnitedNationWo1) কোনো অস্তিত্ব ই নেই! আবার আমাদের রাজ্যের শাসকদলের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল UN এর সম্মান পাওয়ার খবরে ট্যাগ করে আর একটি টুইটার হ্যান্ডেল কে(@Unwpa_wpa) তার ফলোয়ার্স মাত্র 13 এবং তা ফিলিপাইনস থেকে পরিচালিত হচ্ছে! আর এর ফেসবুক পেজের  ফলোয়ার্স 700 এর কম। একটা আন্তর্জাতিক সংস্থার ফলোয়ার্স এত কম! সম্ভবই নয়।

চার, পশ্চিমবঙ্গ কে লেখা চিঠিতে যে ওয়েবসাইট দেওয়া আছে সেই ওয়েবসাইট এ ভারতের রাষ্ট্রদূত এর নাম হিসাবে উল্লেখ আছে 'Her Excellency পিঙ্কি দত্ত'! তার সম্বন্ধে সন্দেহ হওয়াতে তাঁর সম্বন্ধে খোঁজখবর নেওয়া হয়। ফেসবুকে 'Priya Dutta' নামে তাঁর প্রোফাইল আছে। দেখা যায় সেখানে পিংকি দত্ত ওরফে প্রিয়া দত্ত নিজেকে freelance journalist বলে পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল দেখে বোঝা যাচ্ছে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র বিরোধী এবং রাম মন্দিরের ভূমি পূজন নিয়ে বিরোধিতা করছেন। এবং অমিত শাহের অসুস্থতা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন!
তাহলে কি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সহায়ক কোন সংস্থা থেকে চিঠি এসেছে?

OPINDIA যোগাযোগ করার চেষ্টা করে UNWPA এর সাথে যে তারা কি এরকম কোনো চিঠি ইস্যু করেছে? 4:30 AM এ উত্তরে তারা জানায় ওই রাজনৈতিক দলের অফিশিয়াল টুইট এবং মিডিয়াতে চর্চিত ওই চিঠি সম্পূর্ণভাবে ভুয়ো। এখানেই শেষ নয় এর দু ঘন্টা পরে তারা আবার জানায় যেহেতু জাপান থেকে এই চিঠি ইস্যু হয়নি, তাই হয়তো এটি তাদের ভারতের অফিসের 'her excellency' পিংকি দত্ত ওরফে প্রিয়া দত্ত নিজে থেকে ইস্যু করেছে!

তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো? রাষ্ট্রসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সহযোগী কোন সংস্থা থেকে পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণকে বাহবা জানিয়ে কোনো চিঠি আসেনি। জাপানের ওই সংস্থা কোন চিঠি দেয়নি, তবে জাপানের সংস্থাটির ভারতীয় রিপ্রেজেন্টেটিভ পিংকি দত্ত ওরফে প্রিয়া দত্ত এই চিঠিটি ইস্যু করেছেন!

অর্থাৎ, বোঝা গেল এই সমস্ত আসলে এক গভীর ষড়যন্ত্র। বাংলার মানুষকে বোকা বানানোর কৌশল ফেঁদেছিল একদল মানুষ।  তারা এখন জালিয়াতি করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাকেও ছেড়ে দিচ্ছে না!

ভয়ানক দিকে যাচ্ছে আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ! কিছু লোক বলছে 
"কি ভয়ানক জোচ্চোর। রাষ্ট্রসংঘের লোগো নকল। ভুল ইংরেজীতে মিথ্যে চিঠি।
উনি এটাকেও জাস্টিফাই করে দেবেন।🤔🤔"

#সংগৃহিত

Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post.
 Thanks & Jai Hind 🇮🇳!! Saroop Chattopadhyay.

Sunday, August 16, 2020

গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং ১৯৪৬, ১৬ই আগষ্টের এর ইতিহাস। History of "The Great Calcutta Killing" which was started on 16thAug'1946.


জিন্নার পূর্বপুরুষরা ছিলেন হিন্দু এবং তাঁরা ছিলেন গুজরাটের বাসিন্দা। ''কোন হিন্দুর মুসলমান হয়ে যাওয়ার মানে শুধু হিন্দু সমাজের একজন সদস্য কমে যাওয়া নয়, একজন শত্রু বৃদ্ধি পাওয়া," স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণী যে কতখানি সত্য, তা বুঝতে পারবেন জিন্না হিন্দুদের কী ধরণের শত্রু হয়ে উঠেছিলেন এবং তিনি হিন্দুদের কী পরিমাণ ক্ষতি করেছেন সে সম্পর্কে একটা ধারণা হলে।

ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত জিন্নার প্রিয় কাজ ছিল জলের মত মদ খাওয়া। জীবনে নামাজ রোজা করেছেন কি না সন্দেহ, শূকরের মাংস ছিল তাঁর প্রিয় খাদ্য। ভারতের মুসলমানদের জিন্না যথেষ্ট ঘৃণা করতেন। তবু তাঁর জ্ঞান ও বুদ্ধির কারণে, মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমি পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখা রহমত আলী ১৯৩৩ সালে জিন্নাকে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের জন্য আন্দোলন করার প্রস্তাব দিলেন।

জিন্না তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, "এটি একটি অসম্ভব স্বপ্ন।"
কিন্তু রহমত কোরাণ খুলে জিন্নাকে দেখিয়ে বলেছিলেন, "এ অসম্ভব নয়, সম্ভব। মুসলমানদের জাগিয়ে পাকিস্তান আদায়ের জন্য সব রকম উপাদান কোরাণের মধ্যে রয়েছে।"
জিন্না বিষয়টি নিয়ে ভাবতে লাগলেন এবং কোরাণের তত্ত্ব জিন্নাকে এমনই প্রভাবিত করল যে, পাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর জিন্না কয়েক বছর পরেই বললেন, "কয়েক শতক আগে যেদিন প্রথম হিন্দুটি ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিল, সেদিনই পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে।"
অর্থাৎ জিন্নার মতে পাকিস্তান রাষ্ট্র অলরেডি সৃষ্টি হয়েই আছে, এখন তা বাস্তবায়ণ শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪০ সালে ২৩শে মার্চ লাহোর প্রস্তাবে জিন্না বললেন, "ভারতবর্ষের সমস্যা সাম্প্রদায়িক নয়, বরং জাতিগত। এটা খুবই দুঃখের যে হিন্দুরা ইসলাম ও হিন্দুত্বের প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে পারছেন না। ইসলাম এবং হিন্দুত্ব শুধুমাত্র আলাদা ধর্ম নয়, সম্পূর্ণ বিপরীত দুই জাতিসত্ত্বা। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, হিন্দু ও মুসলমানরা দুটি পৃথক ইতিহাস থেকে প্রেরণা পায়। এদের একজনের মহাপুরুষ অন্য জনের শত্রু। মুসলমানরা সংখ্যালঘু নয়, মুসলমানরা একটা আলাদা জাতি। জাতি গঠনের সমস্ত প্রয়োজনীয় উপাদান তাদের মধ্যে আছে। তাই তাদের অবশ্যই নিজের বাসভূমির অধিকার আছে।" (ভি.পি মেনন, ট্রান্সফার অব পাওয়ার, পৃষ্ঠা-৮২)।

এর ১০ দিন পর ১৯৪০ সালের ৬ই এপ্রিল, গান্ধীজী মুসলিম লীগের দাবিকে সমর্থন করে হরিজন পত্রিকায় লিখলেন, "দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মত মুসলমান দেরও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আছে। বর্তমানে আমরা একটা যৌথ পরিবারের মত বসবাস করছি। তাই এর কোন এক শরিক ভিন্ন হতে চাইতেই পারে।"

মূলত: এই দুটি ঘটনাতে ১৯৪০ সালেই ভারত ভাগ হয়ে গিয়েছিল, ১৯৪৭ সালে তা শুধু বাস্তবায়ণ হয়েছে মাত্র।
মুসলমানরা যাতে পাকিস্তানের দাবী ভুলে না যায়, সেইজন্য ১৯৪২ সালের ১৮ই এপ্রিল গান্ধীজী হরিজন পত্রিকায় আবার লিখলেন, "যদি ভারতের বেশীর ভাগ মুসলমান এই মত পোষণ করে যে মুসলমানরা একটা আলাদা জাতি, যাদের সঙ্গে হিন্দু ও অন্যান্য গোষ্ঠীর মিল নেই, তবে পৃথিবীর এমন কোন শক্তি নেই যে সেই চিন্তাভাবনা থেকে তাদের বিরত করতে পারে এবং সেই ভিত্তিতে তারা যদি বেশীর ভাগ চায়, তবে অবশ্যই দেশভাগ করতে হবে। তবে ইচ্ছা করলে হিন্দুরা তার বিরোধীতা করতে পারে।"
জিন্না দেখলেন তাঁর দাবীর তেমন কোন বিরোধীতা হিন্দুদের মধ্যে নেই, বরং হিন্দুদের প্রধান নেতা গান্ধীজীর তাঁর দাবীর ব্যাপারে যথেষ্ট অনুমোদন রয়েছে।
এরপর ১৯৪৪ সালে জিন্নার সাথে গান্ধীজীর বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎ হয়।
গান্ধীজী জিন্নাকে বললেন, "আমি আপনার বা ইসলামের শত্রু নই, আমি আপনাদের দীন সেবক মাত্র। আমাকে দয়া করে ফিরিয়ে দেবেন না।"

গান্ধীজীর এই অসহায় আত্মসমর্পণএর উৎফুল্ল জিন্না পাকিস্তান আদায়ের প্ল্যান তৈরি করে ফেললেন। কারণ জিন্না বুঝেছিলেন শুধু মুখে বলে কিছু আদায় হবেনা, এর জন্য এ্যাকশনে যেতে হবে। তাই ১৯৪৬ সালের ২৮শে জুলাই বোম্বেতে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের জাতীয় সভায় ১৬ই আগস্ট জিন্না, "ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডে," বা "প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস," হিসেবে ঘোষণা করলেন।
এই সভায় জিন্না বললেন, "পাকিস্তান বাদ দিয়ে অন্য কোনকিছুর সঙ্গেই মুসলমান জাতি কোনপ্রকার আপোষ করবে না, এখন সময় হয়েছে সেই দাবী আদায়ে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার। আমরা আজ একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সব সময়ই আমরা নিয়মতান্ত্রিক পথেই দাবী জানিয়ে এসেছি। কিন্তু আজ সময় এসেছে সেই নিয়মতান্ত্রিক পথকে বিদায় জানাবার। আজ আমাদের কাছে একটি পিস্তল আছে এবং আমরা তা ব্যবহার করতে সমর্থ।("পীরজাদা, ফাউন্ডেশন অব পাকিস্তান, পৃষ্ঠা-৫৬০)।

      ১৯৪৬ সালে সমগ্র বাংলায় মুসলমান ছিল ৫৫%, হিন্দু ৪৫%। তাই খুব সহজেই কংগ্রেসকে হারিয়ে প্রাদেশিক নির্বাচনে জিতে বাংলায় ক্ষমতা দখল করে মুসলিম লীগ। সোহরাওয়ার্দী বা সুরাবর্দী হলেন মুসলিম লীগ সরকারের মূখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ছিল তাঁর হাতে। জিন্নার ডাইরেক্ট এ্যকশন ডে বাস্তবায়ণএর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন এই জল্লাদ। ২৮শে জুলাই থেকে ১৬ই আগস্ট, সময় খুব কম। তাই খুব দ্রুত পরিকল্পনামাফিক এগোতে থাকলেন তিনি।
১৯৪৬ সালের ৫ই আগস্ট স্টেটসম্যান পত্রিকার এক নিবন্ধে সুরাবর্দী লিখলেন, "হিংসা এবং রক্তপাত অন্যায় নয়, যদি তা মহৎ উদ্দেশ্যে করা হয়। মুসলমানদের কাছে আজ পাকিস্তান আদায় করা ছাড়া অন্য কোন প্রিয় কাজ নেই।"
ওই দিনই খাজা নাজিমুদ্দিন যিনি পরে পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হন, তিনি মুসলিম ইনস্টিউটে মুসলিম ন্যাশনাল গার্ডদের এক সমাবেশে বলেন, "মুসলিম লীগের এটা পরম সৌভাগ্য যে, এই রমজান মাসেই সংগ্রাম শুরু হবে। কারণ এই রমজান মাসেই জিহাদের নির্দেশ দিয়েছেন আল্লা।"
এই সঙ্গেই কলকাতার মেয়র ওসমান খান উর্দুতে একটি প্রচারপত্র বিলি করেন যাতে লেখা ছিল, "আশা ছেড়ো না, তরোয়াল তুলে নাও, ওহে কাফের, তোমাদের ধ্বংসের দিন বেশী দূরে নয়।"
এই লিফলেটে ছিল তরোয়াল হাতে জিন্নার ছবি।

    এ ছাড়া মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে হিন্দুদের কিভাবে ধ্বংস করা যাবে সেই রকম ২৩টি নির্দেশ সংক্রান্ত একটি লিফলেট বিলি করা হয়। নির্দেশগুলো এইরকম:--

১। ভারতের সকল মুসলমান পাকিস্তানের দাবীতে প্রাণ দেবে।

২। পাকিস্তান জয়ের পর সারা ভারত জয় করতে হবে।

৩। ভারতের সব মানুষকেই ইসলামে ধর্মান্তরিত করতে হবে।

৪। সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্রকেই বৃটিশ-আমেরিকার পৃথিবী শোষণের সাথে হাত মেলাতে হবে।

৫। একজন মুসলমানকে ৫জন হিন্দুর অধিকার পেতে হবে, অর্থাৎ একজন মুসলমান সমান ৫জন হিন্দু।

৬। যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তান ও ভারত স্থাপিত না হয়, ততদিন পর্যন্ত নিম্নলিখিত কাজগুলি করে যেতে হবে।

৭। হিন্দুদের যত কলকারখানা ও দোকানপাট আছে, তা ধ্বংস করতে হবে এবং লুঠ করতে হবে এবং লুঠের মাল মুসলিম লীগ অফিসে জমা দিতে হবে।

৮। মুসলিম লীগের সব সদস্যকে অস্ত্র বহন করতে হবে।

৯। সকল জাতীয়তাবাদী মুসলমান যারা লীগের সাথে যুক্ত হবে না অর্থাৎ কংগ্রেসী, তাদের গুপ্তহত্যা করতে হবে।

১০। হিন্দুদের ক্রমাগত খুন করে যেতে হবে এবং তাদের সংখ্যা কমাতে হবে।

১১। সমস্ত মন্দির ধ্বংস করতে হবে।

১২। কংগ্রেস নেতাদের প্রতিমাসে ১জন করে খুন করতে হবে।

১৩। কংগ্রেসের অফিসগুলি ধ্বংস করাতে হবে।

১৪। করাচী, বোম্বাই, কলিকাতা, মাদ্রাজ, গোয়া ও বিশাখাপত্তনম ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে অচল করে দিতে হবে।

১৫। কোন মুসলমানকে হিন্দুদের অধীনে সামরিক বাহিনী, নৌবাহিনী, সরকারী, বেসরকারী কোথাও কাজ করতে দেওয়া হবে না।

১৬। মুসলমানদের সমস্ত ভারত ও কংগ্রেসকে অন্তর্ঘাত করে যেতে হবে, মুসলমানদের দ্বারা শেষ ভারত আক্রমণ হওয়া পর্যন্ত।

১৭। এসব ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অর্থ দেবে মুসলিম লীগ।

১৮। সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র বোম্বাই, দিল্লী, কলিকাতা, মাদ্রাজ, ব্যাঙ্গালোর, লাহোর, এবং করাচির মুসলমানদের হাতে ভাগ করে দেওয়া হবে।

১৯। মুসলিম লীগের সব সদস্য অস্ত্র ব্যবহার করবে, এমনকি দরকার হলে পকেটে রাখার মতো ছোরা ব্যবহার করবে, যাতে ভারতবর্ষ থেকে সমস্ত হিন্দুদের তাড়িয়ে দেওয়া যায়।

২০। সমস্ত বাহন হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করা হবে।

২১। সমস্ত হিন্দু নারী ও মেয়েদের ধর্ষণ করবে, লুঠ করবে, ইসলামে ধর্মান্তরিত করবে ১৬ই আগস্ট, ১৯৪৬ সাল থেকে।

২২। হিন্দু সংস্কৃতি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে হবে।

২৩। লীগের সমস্ত সদস্যরা হিন্দুদের প্রতি সব সময় নিষ্ঠুর ব্যবহার করবে এবং তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব ব্যাপারে পরিত্যাগ করবে।
  
এর পাশাপাশি নোয়াখালি, ত্রিপুরা, চট্টগ্রাম, ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, নদীয়া, ২৪ পরগনা প্রভৃতি জেলায় মুসলিম লীগের আহ্বানে অনুষ্ঠিত জনসভায় আকারে ইঙ্গিতে মুসলমানদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে দেশে মুসলিম লীগের সরকার আছে, সুতরাং পাকিস্তান আদায়ের জন্য ১৬ই আগস্ট থেকে অগ্নিসংযোগ, লুঠ, নারী অপহরণ, ধর্ষণ, খুন এসবের জন্য কারও কোন প্রকার শাস্তি হবে না।

এসব প্রচারের সাথে সাথে বাইরে থেকে প্রচুর সংখ্যক মুসলমানকে কলকাতায় এনে বিভিন্ন মুসলমান বস্তিতে রাখা হয়।
এ্যাকশন শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকে চোখে পড়ছিল কিছু খণ্ডিত দৃশ্য:-

১। বেলগাছিয়া, রাজাবাজার, কলাবাগান বস্তি, ক্যানাল ওয়েস্ট রোড, ধর্মতলা, পার্কসার্কাস, এন্টালি প্রভৃতি এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে মুসলমানরা বিভিন্নরকম অস্ত্রশস্ত্রে ধার দিচ্ছিল।

২। বেলগাছিয়া ও বি টি রোডে লাঠি, ছোরা ও তরোয়াল ভর্তি লরি দেখা যাচ্ছিল।

৩। মানিকতলায় ক্যানাল ওয়েস্ট রোডে অস্ত্র ভর্তি ঠেলাগাড়ি দেখা যাচ্ছিল।

৪। মুসলমানদের দোকানগুলোতে পাকিস্তান লিখে চিহ্নিত করা হচ্ছিল।

      কলকাতার মেয়র ওসমান খান কর্পোরেশনের সব লরী মুসলিম লীগের নেতাদের ব্যবহারের জন্য দিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে করে মুসলমানরা সে সব লরী ব্যবহার করে ইচ্ছেমত লুঠপাট করতে পারে আর হিন্দুদের মারার জন্য অস্ত্রশস্ত্র বহন করে বিভিন্ন এলাকার মুসলমানদের হাতে তা পৌঁছে দিতে পারে। এই লরীগুলো যাতে ঠিক মত চলতে পারে, সেই জন্য সুরাবর্দী সরকার সেই সময় পেট্রোলের যথেষ্ট অনটন থাকা সত্ত্বেও ঢালাও ভাবে লুঠপাট ও হিন্দু হত্যার কাজে নিয়োজিত লরীগুলোর জন্য পেট্রোলের কূপন ইস্যু করেছিল। এছাড়া বর্তমান বাংলাদেশে ব্যবসায়রত ইস্পাহানি মির্জাপুর চা কোম্পানির মালিক ইস্পাহানি ছিলেন সেই সময় সুরাবর্দী সরকারের চাল সরবরাহকারী। ইস্পাহানি নিজের সব লরী মুসলিম লীগের লোকজনদের ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডের সময় ব্যবহারের জন্য দিয়ে দিয়েছিলেন। এসব লরীতে মুসলিম লীগের পতাকা টাঙ্গিয়ে তা সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। যেসব লরীর পেট্রোলের কূপন ছিল না, তারা জোর করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে পেট্রোল আদায় করেছিল।

    ১৮ দিন ধরে সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়ার পর, ১৫ই আগস্ট ১৯৪৬ তারিখে মুসলিম লীগ ১৬ই আগস্ট বাংলা বন্ধের ডাক দেয়, আর কোন কারণ না থাকা সত্ত্বেও সুরাবর্দী ঐ দিন ঘোষণা করেন সরকারী ছুটি। উদ্দেশ্য, যাতে নিরাপদে এবং নিশ্চিন্তে মুসলমানরা হিন্দুদের হত্যা করতে পারে ও তাদের ধন সম্পত্তি লুঠ করতে পারে। এ্যাকশনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক মুসলমানদের কলকাতা শহর বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করে, এক এক এলাকার দায়িত্ব এক এক এলাকার মুসলমানদের দেওয়া হয়। যেমন বেলগাছিয়ার মুসলমানদের উপর দায়িত্ব পড়ে পুরো বেলগাছিয়া এলাকা বিধ্বস্ত করার। রাজাবাজার এলাকার মুসলমানদের উপর দায়িত্ব পড়ে মানিকতলা থেকে শিয়ালদহ এবং বৌবাজার ও কলেজস্ট্রীট এলাকা। কলাবাগান বস্তির মুসলমানদের জন্য নির্দিষ্ট হয় হ্যারিসন রোড, বড়বাজার, ঠনঠনিয়া, মার্কাস স্কোয়ার ও ফলপট্টি অঞ্চল। কলুটোলা, জ্যাকেরিয়া স্ট্রীট, নাখোদা মসজিদ, টেরিটি বাজার, ফিয়ার্স লেন এলাকার মুসলমানদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় লালবাজার থেকে চিৎপুর এবং ক্যানিং ও এজরা স্ট্রীট অঞ্চল। এছাড়া ধর্মতলা, তালতলা, ওয়েলেসলি, পার্কসার্কাস, বেলেঘাটা, বালিগঞ্জ, খিদিরপুর, ওয়াটগঞ্জ, মেটিয়াবুরুজের মুসলমানদের উপর ভার পড়ে স্ব স্ব এলাকার হিন্দুদের হত্যা করার ও তাদের ধনসম্পত্তি লুঠপাট করার।এই হিন্দু হত্যার প্রত্যক্ষ পরিচালক রহমান আলী ১৫ই আগস্ট রাতে তার লোকজন নিয়ে কলকাতায় এসে পড়ে এবং মুসলমান গুণ্ডাদের খিদিরপুর, কলুটোলা, রাজাবাজার, ধর্মতলা, পার্কসার্কাস, তালতলার বিভিন্ন মুসলমান বস্তিতে থাকার ব্যবস্থা করে। রহমান আলী সবাইকে বলে দিয়েছিল লুঠের মালের ভাগ কাউকে দিতে হবে না। আর খুন, ধর্ষণ, অপহরণে পুলিশ কোন নাক গলাবে না, সরকার থেকে এসব দেখবে।
ভেতরে ভেতরে এসব প্রিপ্যারেশন নেওয়া হল আর মুখে বলা হল ১৬ই আগস্ট প্রত্যক্ষ সংগ্রামের দিন মুসলিম লীগের নেতাকর্মীরা এখানে সেখানে মিছিল মিটিং করে পাকিস্তানের পক্ষে জনমত গঠন করবে, এককথায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস হবে শান্তিপূর্ণ!

আগেই উল্লেখ করেছি মুসলিম লীগ ১৬ই আগস্ট বাংলা জুড়ে হরতালের/বন্ধের ডাক দেয় এবং সূরাবর্দীর সরকার সরকারী ছুটি ঘোষণা করে। মুসলিম লীগের এই যৌথ কর্মসূচীতে কংগ্রেস কিছুটা হৈচৈ করে বটে, কিন্তু আইনসভার চার দেওয়ালের মাঝেই তা আটকে থাকে, এর বিরুদ্ধে জনমত গঠন করে এটাকে প্রতিরোধের কোনো চেষ্টাই কংগ্রেস করেনি। একমাত্র ড: শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির হিন্দু মহাসভা জায়গায় জায়গায় প্রতিবাদ কর্মসূচী চালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু কংগ্রেসের মত জনসমর্থন না থাকায় লোকজনের মাঝে তা বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি।
"প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস শান্তিপূর্ণ ভাবে পালন করা হবে," জিন্না ও মুসলিম লীগের এই মিথ্যা আশ্বাসে ভুলে গান্ধীজী চুপ করে থাকেন।
আর নেহরু বললেন, "যারা বন্ধ সমর্থন করে না, তারা যেন প্রতিদিনের মতই হাট, বাজার, অফিস করে।"
মুসলিম লীগের প্রত্যক্ষ সংগ্রাম নিয়ে সবচেয়ে অদ্ভুত স্ট্যান্ড নেয় কমিউনিস্ট পার্টি।
১৩ই আগস্ট, ১৯৪৬এ পার্টির নেতা জ্যোতি বসু এক প্রচার বিজ্ঞপ্তিতে জানালেন, "মূলত: আমাদের পার্টির চেষ্টা হবে মুসলিম লীগের ডাকা বাংলা বন্ধের দিন রাজ্যের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা। তাই যেখানে প্রয়োজন আমরা বন্ধ সমর্থন করব, আর যেখানে প্রয়োজন নয়, সেখানে বন্ধের বিরোধীতা করব।" কমিউনিস্টদের সিদ্ধান্ত ছিল যেখানে বন্ধের প্রয়োজন, অর্থাৎ মুসলিম এলাকায় ওরা বন্ধ সমর্থন করবে, আর যেখানে বন্ধের প্রয়োজন নেই, অর্থাৎ হিন্দু এলাকায় বন্ধ সমর্থন করবে না, বন্ধের প্রতিবাদ করবে। ১৪।৮।১৯৪৬ তারিখে অমৃতবাজার পত্রিকায় বেরিয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টির এই নীতির খবরটি।

কলকাতার মেয়র ওসমান খান এবং তাঁর সহযোগী শরীফ খান, সক্রিয়ভাবে ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডের এই হিন্দু হত্যা পরিচালনা করেন। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রদপ্তর ছিল মূখ্যমন্ত্রী সুরাবর্দীর হাতে। এই এ্যাকশনে পুলিশ প্রশাসনের কোন সাহায্য যাতে হিন্দুরা না পায়, সেই জন্য রাজ্যের ২৪টি পুলিশ হেড কোয়াটার্সের সব কয়টি থেকে হিন্দু পুলিশ অফিসার সরিয়ে ২২টিতে মুসলিম পুলিশ অফিসার এবং ২টিতে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পুলিশ অফিসার নিয়োগ করেন সুরাবর্দী। 

শুধু তাই নয়, ১৬ই আগস্ট সকাল থেকে সুরাবর্দী এবং মেয়র ওসমান খান বসেছিলেন লালবাজার পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে এবং সেখান থেকেই তাঁরা নজর রাখছিলেন মুসলমানরা কোন এলাকায় কত হিন্দু মারতে পারল। এমনকি একটি থানা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও সুরাবর্দী ঐ থানায় লালবাজার থেকে কোন পুলিশ ফোর্স পাঠাননি।

   ১৫ই আগস্ট রাতে টার্গেট এলাকার সমস্ত মসজিদে মুসলমানদের জড় করা হয়েছিল। যাদের অস্ত্র ছিল না, মসজিদেই তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারপর ফজরের (ভোরের) নামাজ শেষে খোলা তরবারি হাতে মুসলমানাদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাস্তায়।

 অন্যদিকে নির্বোধ হিন্দুরা মুসলমানদের দুই সপ্তাহের প্রস্তুতি দেখেও তার বিরুদ্ধে কোন রকম সাবধানতা না নিয়ে নিশ্চিন্ত ঘুমিয়ে ১৬ই আগস্ট সকালে যেই না রাস্তায় বেরিয়েছে, অমনি মুসলমানরা আক্রমণ করে তাদের খুন করতে শুরু করে ।
প্রথম ছুরিকাঘাত করা হয় ভোর ৪.৩০ মিনিটে, ভোরের হাওয়া খেতে বের হওয়া এক হিন্দুকে। এরপর সকাল সাড়ে ছটায় বিপুল সংখ্যক মুসলমান আক্রমণ করে মানিকতলা বাজার, ভাংচুর ও লুঠ করতে থাকে হিন্দুদের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসময় দুজন হিন্দু মহিলা মুসলমানদের হাতে আক্রান্ত হয়, একজন হিন্দু পুরুষ ছুরিকাঘাতে নিহত হয়।

এরপর থেকে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে লালবাজার পুলিশ হেড কোয়াটার্সএ যেসব খুন জখম লুঠপাট ও অগ্নি সংযোগের খবর আসতে থাকে সেগুলো হলঃ-

সকাল ৭ টা: মানিকতলা মুসলমানরা আক্রমণ করেছে।
সকাল ৭.৩০: লালবাজার টেলিফোন অফিসের কর্মকর্তা সার্জেন্ট ই উইয়লিয়াম থানায় রিপোর্ট করেন যে তিনি যখন তাঁর মহিলা সহকর্মীকে প্রহরা দিয়ে একটি পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে সেন্ট্রাল এভিনিউ দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় তাঁর গাড়িতে মুসলমানরা হামলা করে এবং তাঁদের আহত করে।
সকাল ৭.৩৫: বউবাজার ও লোয়ার সার্কুলার রোডের সংযোগস্থল শিয়ালদহে বিরাটসংখ্যক মুসলমান লাঠি ও লোহার রড সহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমায়েত হয়েছে।
সকাল ৮.২৫: টেরিটিবাজার মুসলমানরা আক্রমণ করেছে।
সকাল ৮.৩০: লোয়ার চিৎপুরে সিটি সিনেমা হল এলাকায় মুসলমানরা আক্রমণ করেছে।
সকাল ৯টা: শিয়ালদহ এলাকার অবস্থা ভয়াবহ।
সকাল ৯.০৫: ওয়ার্ডস ইনস্টিউশন স্ট্রীটে মুসলমানরা আক্রমণ করেছে।
সকাল ৯.১২: রিপন স্ট্রীট, ওয়েলেসলি স্ট্রীট ও মল্লিকবাজার এলাকায় মুসলমানরা যাকে পাচ্ছে তাকেই ছুরিকাঘাত করে হত্যা করছে।
সকাল ৯.৩০: বড়তলা থানার পুলিশেরা মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত। থানা থেকেই সশস্ত্র পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে লালবাজার পুলিশ হেডকোয়াটার্সে।
সকাল ৯.৫৫: বড়তলা থানা থেকে আবার সাহায্যের অনুরোধ।
সকাল ১০.১০: দমদম রোডে কয়েক হাজার মুসলমান আক্রমণ করেছে। হিন্দুরা বাধা দেবার চেষ্টা করলে মুসলমানরা গুলি বর্ষণ করেছে।
সকাল ১০.১২: গড়পার যোগীপাড়া লেন অর্থাৎ ক্যানাল অঞ্চল মুসলমানরা আক্রমণ করেছে।
সকাল ১০.৩০: হ্যারিসন রোডে গোলমাল, রিপন কলেজের সামনে দুপক্ষের লড়াই চলছে।
বেলা ১১.০৮: ২১২, বিবেকানন্দ রোডের কমলা বস্ত্রালয়ে আগুন লাগান হয়েছে।
বেলা ১১.১৫: রিপন কলেজের সামনে সাংঘাতিক দাঙ্গা চলছে।
বেলা ১১.৫০: মুসলমানদের একটি বিরাট দল শিয়ালদহের দিক থেকে দোকান পাট লুঠ করতে করতে বউ বাজারের দিকে আগুয়ান। আর একটি দল হিন্দু বিরোধী শ্লোগান দিতে দিতে এবং দোকান লুঠ করতে করতে আপার সার্কুলার রোড ধরে ময়দানের দিকে এগিয়ে চলেছে। লাঠি ও খোলা তরবারি হাতে মুসলমানদের আর একটি দল শ্যামবাজার থেকে হাতিবাগান পর্যন্ত এগিয়ে আসছে।
দুপুর ১.৩০: ষষ্ঠীতলায় হিন্দুদের ঘরবাড়িতে অগ্নি সংযোগ, নারকেলডাঙ্গা মেইন রোডের কাছে পড়ে আছে ৫ টি মৃতদেহ।
বিকেল ৩টা: গড়পার এলাকায় ভয়ানক হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছে। খালের পশ্চিমপাড়ে হিন্দুদের পাইকারিভাবে হত্যা করা হচ্ছে। হিন্দুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই সময় ময়দানে মনুমেন্টের নিচে মুসলমানদের সমাবেশ চলছিল। সেখান থেকে হিন্দুবিরোধী বক্তৃতা দেওয়া হচ্ছিল, সমাবেশ শেষ হতে না হতেই মুসলমানরা হিন্দুদের দোকানে ভাঙচুর ও লুঠপাট করতে শুরু করে।
বিকেল ৪.০৫: লাইটহাউস সিনেমার পাশে সমস্ত হিন্দু মালিকানাধীন দোকান ভাঙা ও লুঠপাট চলছে।
বিকেল ৪.২০: মুসলমানরা বেঙ্গল ক্লাব আক্রমণ করেছে।
বিকেল ৪.৩০: মেট্রো সিনেমার পাশে কে সি বিশ্বাসের বন্দুকের দোকান ভেঙ্গে সমস্ত অস্ত্র লুঠ করে নিয়ে গেছে মুসলমানরা। ঐ অঞ্চলে আরও লুঠপাট চলছে।
বিকেল ৪.৪২: ধর্মতলা রোডের বিখ্যাত কমলালয় স্টোর্স সম্পূর্ণ লুঠ হয়ে গেছে।

বিকেল ৫.১০: এর পর ক্রমশ...

     কলকাতার সব বড় বড় রাস্তায় নৃশংস হত্যা ও লুণ্ঠন চলছে। ধর্মতলা স্ট্রীটে চাঁদনি চক বাজার মুসলমানদের দ্বারা লুণ্ঠিত। ইন্দ্র রায় রোডে সশস্ত্র মুসলমানরা বেরিয়ে আসছে।
মির্জাপুর স্ট্রীট ও আপার সার্কুলার রোডের সংযোগস্থল সশস্ত্র ও উত্তেজিত মুসলমানদের দ্বারা পরিপূর্ণ।
ওয়েলেসলি স্ট্রিটে বাটা সু কোম্পানি ও সেন এন্ড ল'র দোকান লুঠ করা হয়েছে।
৮ নং তারা চাঁদ দত্ত স্ট্রীটে গমের কলের হিন্দুদের খুন করা হয়েছে।
১৫২ নং লোয়ার সার্কুলার রোডে লক্ষীকান্ত দাসের সাইকেলের দোকান লুঠ করা হয়েছে এবং তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রীটের সমস্ত হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৫৫, ক্যানিং স্ট্রীটের এ্যালুমিনিয়ামের একটি দোকান লুঠ করা হয়। কয়েক শত মুসলমান ঐ দোকান লুঠ করে বিভিন্ন মাল নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় ৬জন নিহত এবং ৭জন আহত হিন্দুকে তারা উঠিয়ে নিয়ে যায়।
মারকুইস স্ট্রীট, এলিয়ট রোড, কর্পোরেশন স্ট্রীট আর ওয়েলেসলি স্ট্রীটে হিন্দুদের পাইকারিভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং তাদের বাড়িঘর লুঠ করা হয়েছে।
ডি.সি নর্থ খান সাহেব খলিলুর রহমান তাঁর রিপোর্টে ১৬ই আগস্ট সম্পর্কে লিখেছেন, "বিশৃঙ্খলা এবং অরাজকতা চলেছে ধর্মতলা স্ট্রীট, ওয়েলেসলি স্ট্রীট, মার্কেট স্ট্রীট, কর্পোরেশন স্ট্রীট এবং ফ্রি স্কুল স্ট্রীটে। দোকান লুঠ হয়েছে, খুন হয়েছে এবং হামলা এখনও চলছে। মিলিটারী মোতায়েন করা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন।"

উপরের এই বর্ণনা শুধু মাত্র ১৬ই আগস্টের। 

এরপর 

১৭ তারিখ পুরো দিন এবং ১৮ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত মুসলমানরা একইভাবে হিন্দুদের হত্যা, মেয়েদের ধর্ষণ, প্রাণের ভয় দেখিয়ে ধর্মান্তরের চেষ্টা, বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগ এবং লুঠপাট করতে থাকে।
এভাবে গৃহহীন হয় হাজার হাজার হিন্দু। ধর্ষিতা এবং অপহৃতা মহিলাদের কোনো হিসেব ছিল না। কলকাতার রাস্তায় এখানে সেখানে জমে উঠেছিল লাশের পাহাড়। এই খুন হত্যার বীভৎসতা দেখে স্টেটসম্যান পত্রিকার বৃটিশ সাংবাদিক কিম ক্রিস্টেন লিখেছিলেন, "দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) অভিজ্ঞতায় আমার স্নায়ু যথেষ্ট কঠিন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যুদ্ধও এত পৈশাচিক নয়, এ এক মধ্যযুগীয় বর্বর উন্মাদনা এবং এটাকে পৈশাচিক রূপ দেওয়া হয়েছিল।"
জ্যোতি বসু তাঁর লেখা এক বইয়ে কলকাতার এই ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডের কথা লিখতে গিয়ে লিখেছেন, "প্রথম তিন দিনে প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত হয়।" অন্যান্য সূত্রে যে তথ্যগুলো পাওয়া যায় তা হল শহরের সমস্ত ড্রেন হিন্দুদের লাশে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল, আর গঙ্গায় এত লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে দুর্গন্ধে মাঝিদের নৌকা চালান অসাধ্য হয়ে উঠেছিল। বাঁশের লগি দিয়ে লাশ সরিয়ে সরিয়ে রাস্তা তৈরি করে মাঝিদের নৌকা এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিল। এই দৃশ্যগুলো কল্পনা করুন আর ভাবুন ১৯৪৬ সালে কলকাতায় মুসলমানরা হিন্দুদের ঠিক কত রক্ত ঝরিয়েছিল!

পরিস্থিতি কিছুটা শাস্ত হলে একই রকমের ছোরা বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া গিয়েছিল, বেলগাছিয়া ও খিদিরপুর এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অব্যবহৃত তরোয়াল, লাঠি ও ছোরা উদ্ধার করা হয়েছিল। এগুলো পুরোপুরি ব্যবহার হলে আরও কত হিন্দুর রক্ত ঝরত সেই বিষয়টি একবার কল্পনা করুন। আর একই জায়গা থেকে এরকম বিপুল পরিমাণ অব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার নিঃসন্দেহে এটাই প্রমাণ করে যে হিন্দু হত্যার এই পরিকল্পনা ছিলো সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত এবং অস্ত্রগুলোও মুসলিম লীগ সরকারের পক্ষ থেকেই সরবরাহ করা হয়েছিল। আরও একটা উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যণীয় বিষয় হল হত্যাকাণ্ডে কসাইখানার কসাইদের সক্রিয় ভূমিকায় লাগান হয়েছিল, যাতে কসাইদের জবাই করার দক্ষতাকে হিন্দুদের গলা কাটার জন্য ব্যবহার করা যায় এবং যত বেশী সম্ভব হিন্দুদের হত্যা করা যায়।

ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডের প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল শ্রী গোলক বিহারী মজুমদার আই.পি.এস, "ছেচল্লিশের আতঙ্কের দিনগুলো ভুলি নি," শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন।
সেই প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেছেন, "রাত ১১/১২টা নাগাদ ( ১৬ আগস্ট, ১৯৪৬) পাড়ায় ওরা আবার আক্রমন করলো। দেখলাম একদল লোক - তাদের হাতে ছোরা, তরোয়াল ইত্যাদি নানা অস্ত্রশস্ত্র। তারা চিৎকার করে বলছে, 'আজ তো এক এক হিন্দুকো কোরবানী করেগা।' মা, বাবা, দিদি, আমি, ভাগ্নে সবাই সন্ত্রস্ত। যেকোনো মূহুর্তে আমরা আক্রান্ত হতে পারি। সবচেয়ে বেশি ভয় দিদিকে নিয়ে। দিদি দেখতে খুব সুন্দরী। ভাবলাম দিদিই হবে ওদের প্রথম টার্গেট। হিন্দু মেয়েদের ওপর ওদের বরবারই লোভ। চার পাঁচদিন পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও আতঙ্ক কাটে নি। ইউনিভার্সিটি খোলা ছিল। রাজাবাজারের উপর দিয়ে আমাকে যেতে হত, একদিন দেখলাম গরু কেটে যেমন হুকের সাথে ঝুলিয়ে রাখে, তেমনিভাবে হাত পা কাটা হিন্দু মেয়েদের চুল বেঁধে সব ঝুলিয়ে রেখেছে। বীভৎস আর নৃশংস সেই দৃশ্য।"
দেবকুমার বসু, "১৯৪৬ এর দাঙ্গার কয়েকটা দিন" নামে একটি লেখা লিখেছেন ২০০৬ সালে, সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, "রাজাবাজারের সামনেই ভিক্টোরিয়া কলেজ ও স্কুল, মেয়েদের কলেজ ও হোস্টেল একদম ফাঁকা, সব পালিয়েছে। কেবলমাত্র রাস্তার দোতলার জানালায় চারটি মেয়েকে খুন করে রাস্তার দিকে ঝুলিয়ে রেখেছে কে বা কারা। এই নৃশংসতা ও বীভৎসতা যাঁরা দেখেছেন, তাঁরাই অনুভব করতে পারেন যে আমাদের মত যুবকরা কেন উত্তেজিত হয়ে ক্ষিপ্ত হবে। কেউ এই হোস্টেলের দিকে তাকালে রাস্তার দিকের জানালাগুলি ইট গেঁথে বন্ধ করে দেওয়া আছে দেখবেন। আজ ষাট বছর পরেও বন্ধ আছে। কাদের ভয়ে?"
তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়াভেল তাঁর ডায়েরিতে ৩।১১।১৯৪৬ তারিখে লেখেন, "পলাশীর যুদ্ধে যত লোক নিহত হয়েছে, তার চেয়েও বেশী লোক নিহত হয়েছে গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংএ!"
গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং সম্পর্কে লিওনার্ড মোসলে তাঁর বই, "দ্য লাস্ট ডেজ অব ব্রিটিশ রাজ,"এ লিখেছেন, "ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওড়ার পোল পার হয়ে হাওড়া থেকে দলে দলে আসতে শুরু করলো মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত অবাঙ্গালি মুসলমান গুণ্ডারা এবং তারা মিশে গেল চৌরঙ্গী, চিৎপুরে অপেক্ষমাণ মুসলমানদের সঙ্গে, শুরু হলো প্রলয়কাণ্ড, কলকাতার মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলের হিন্দু এলাকাগুলিতে। ইসলামের বিশ্বপ্রেম গ্রাস করে নিল অরক্ষিত মুসলমান পরিবেষ্টিত হিন্দু পরিবারগুলোকে। আর্ত আহতদের আর্তনাদ, লাঞ্ছিত নারীর ভয়ার্ত ক্রন্দন চাপা পড়ল, "লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান," এবং "আল্লা হো আকবর," এর উন্মত্ত কোলাহলে। আগুনে জ্বলতে লাগল হিন্দুদের স্থাবর অস্থাবর সব কিছু, আকাশে উঠল কুণ্ডলায়িত কালো ধোঁয়া।"
মুসলমানদের এই আক্রমন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর "দ্বিখণ্ডিতা মাতা ধর্ষিতা ভগিনী" পুস্তিকায় লিখেছেন, "১৬ আগস্টের ২/৩ দিন আগে থেকেই কলিকাতার নিকটবর্তী জেলাগুলো থেকে নৌকাযোগে হায়নার দল গঙ্গার ঘাটে ক্রমে ক্রমে বাসা বেঁধেছিল। শ্রাবণের জমাট বাঁধা কালো মেঘের আড়াল ভেঙ্গে সেদিন সূর্য উঠেছিল কলিকাতার আকাশে, আর রাতের আঁধারেই তৈরি হয়েছিল শত শত ইসলামের বিশ্বস্ত সৈনিক সম্পূর্ণ অপ্রস্তত নিরীহ হিন্দুদের প্রাণ সংহার করতে।"

হিন্দুদের বিপদের দিনে প্রতিবেশী মুসলিম পরিবারদের ভূমিকা কেমন ছিল,তার একটি উদাহরণ হলঃ-
 সেই সময়ের একটি ঘটনায় জানা গেছে, মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত হিন্দু পরিবারের একটি অবিবাহিত যুবতী মেয়ে তার প্রতিবেশী মুসলমানের বাড়িতে গিয়ে সাহায্য ও আশ্রয় চাইলে, ওই বাড়ির মুসলমান মালিক মেয়েটিকে প্রকাশ্যে এই প্রস্তাব দেয় যে মুসলমান হলে তাকে সাহায্য ও রক্ষা করবে। 

    সূরাবর্দী সরকারের পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় মুসলমানদের হাতে হিন্দুরা যখন একের পর এক মার খাচ্ছিল, মরছিল আর ধর্ষিতা হচ্ছিল এবং এটা যখন লাগাতার তিন দিন ধরে চলল, তখন কিছু হিন্দু বুঝতে পারল যে হিন্দুদের বাঁচাতে সরকার বা পুলিশ কিছুই করবে না। অতএব যা করার নিজেদেরই করতে হবে। এই ভাবনা নিয়ে একজন কসাই, নাম গোপাল, পাঁঠার মাংস বিক্রি করতেন বলে যাঁর নাম হয়েছিল গোপাল পাঁঠা, সেই গোপাল পাঁঠা ১ দিনের মধ্যে মাত্র ৮০০ হিন্দু ও শিখ যুবককে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলেন এক বাহিনী এবং পাল্টা মুসলমানদের হত্যা করতে শুরু করেন। এর পরই খুব দ্রুত পরিস্থিতি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেতে থাকে এবং সূরাবর্দী তাঁর বিপদ বুঝতে পারেন। তাই মুসলমানরা মার খেতে শুরু করতেই সূরাবর্দী দ্রুত পুলিশ প্রশাসনকে সক্রিয় করেন এবং দাঙ্গা থামাতে বাধ্য হন। গোপাল পাঁঠা নামক এক বীরের নেতৃত্বে ১৯৪৬এ রক্ষা পেল কলকাতার হিন্দুরা।
হিন্দুরা নিজের জাতির লোকের প্রতি কেমন অকৃতজ্ঞ আর বেইমান, গোপাল পাঁঠার প্রতি হিন্দুদের দৃষ্টিভঙ্গীতে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। যাঁর জন্য কলকাতার হিন্দুরা রক্ষা পেল, তাঁকে পরবর্তীকালে কোন হিন্দু তাঁর মূল্যায়ণ করা তো দূরে থাক, তাঁর নাম পর্যন্ত মনে রাখেনি। গোপাল পাঁঠার জীবদ্দশায় একজন মাত্র সাংবাদিক তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। অথচ প্রতিবছর ১৬ই আগস্ট আসে যায়, কিন্তু তাঁকে নিয়ে তাঁর দ্বারা রক্ষিত অর্ধমৃত বৃদ্ধদের কারো কোন মাথাব্যথা নেই!

হিন্দুদের এই অকৃতজ্ঞতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের শ্রদ্ধেয় রবীন্দ্র ঘোষও, তিনি বলেছিলেন, "অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে যখন কোন মেয়েকে মুসলমানদের হাত থেকে উদ্ধার করে তাদের পরিবারে পৌঁছে দিই, তখন অনেকেই ধন্যবাদ পর্যন্ত দেয়না। এই ক্ষোভ এবং লজ্জা আমারও, কিন্ত কাকে দোষ দেব? আমি নিজেই তো হিন্দু সমাজের একজন সদস্য। হিন্দুদের জন্য কাজ করতে হলে এদের নিয়েই কাজ করতে হবে আর অল্প অল্প করে সিস্টেমটাকে পাল্টাতে হবে। আজ আমি বুঝেছি, কাল আপনি বুঝবেন, পরশু আরেকজন বুঝবে এভাবেই হিন্দু সমাজের দুর্বলতাগুলো কেটে যাবে এবং সমাজ আস্তে আস্তে পরিবর্তনের পথে চলবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই, পরিবর্তন এক দিনে হয়না, আর এক দিনে বড় কিছু অর্জন করা যায় না। হিন্দু সমাজের যে ক্ষত ও দুর্বলতা সেই লজ্জা আমাদের পূর্ব পুরুষদের, কিন্তু এখন আমরা যদি সেই দুর্বলতাগুলো কাটানোর চেষ্টা না করি, তাহলে আমরা যেমন এখন পূর্বসূরীদের দায়ী করছি, তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মও আমাদের দায়ী করবে আর গালি দেবে। এ ভুল আমি করতে চাই না, আর আমি বিশ্বাস করি, আপনিও নিশ্চয় চান না।"
গোপাল মুখোপাধ্যায় (গোপাল পাঁঠা) নিয়ে এই ব্লগের আগের লেখা:
১৯৪৬ সালে কলকাতার ও বাংলার হিন্দুদের মুসলিমদের হাত থেকে রক্ষাকর্তা গোপাল মুখার্জী ওরফে গোপাল পাঁঠা সম্মন্ধে কিছু কথা।
https://mamatimanushofwb.blogspot.com/2020/06/blog-post_7.html?m=1


   আজ "গ্রেট ক‍্যালকাটা কিলিং" এর ৭৪ বছর পর, একটা ব‍্যাপার অনুধাবনের প্রয়োজন আছে। সে সময় বৃহত্তর বাংলার শাসক ছিল মুসলিম রা, হিন্দু-মুসলিম জনসংখ্যার শতাংশ ছিল ৪৫% এবং ৫০ % (বাকি ধর্মীয় মানুষদের নগন্য সংখ্যাকে বাদ দিলে)। তাতেই এই ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হতে হয়ে ছিল হিন্দুদের। তাহলে মুসলিম শাষকদের হাতে ভারত যখন শাষিত হচ্ছিল, তখন ভারতে হিন্দুদের অবস্থা কি হয়েছিল?আর ভবিষ্যৎ এ যদি ছেচল্লিশের পরিসংখ্যান ফিরে আসে,তাহলে ভবিষ্যৎ এ হিন্দুদের কি হবে?

তথ‍্যসূত্র:-kolkata tribune
THE GREAT INDIAN DEFENCE NEWS IN BENGALI

#TheGreatCalcuttaKilling
#DirectActionDay
#KNIGHT #GopalMukherjee #GopalPantha

Friday, August 14, 2020

When India got independence? Yes it's not in 15thAug'47..

In our so called independence day we should remember that #India got independence on 21stOct'1943, when United India's 1st PM #Netaji #SubhashChandraBose formed Azad Hind Govt in exile.


15thAug'47 was only unfortunate #Partition of #India & transfer of power completed.

So 15th August is only #PartitionDay


Also remember INDIA DIDN'T GET INDEPENDENCE DUE TO ANY FREEDOM BEGGAR, INSTEAD WE GOT FREEDOM DUE TO FREEDOM FIGHTERS LIKE NETAJI & HIS INA, BHAGAT SINGH, KHUDIRAM BOSE, MANGAL PANDEY ETC AND DUE TO NAVAL MUTINY.

THEN BRITISH PM SIR CLEMENT ATTLEE CONFESSED IT.


#JaiHind 🇮🇳


ভারতবর্ষ প্রকৃত স্বাধীনতা ১৯৪৩ সালের ২১শে অক্টোবর পেয়েছে। যা আমাদের অখন্ড ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু দিয়েছেন।
১৫ই আগষ্ট তো ক্ষমতা হস্তান্তর আর দেশকে দ্বিখন্ডিত করে ক্ষমতা ভাগাভাগির দিন।
#জয়হিন্দ 🇮🇳
https://youtu.be/nTkZH0UfTBc



Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Jai Hind!! Saroop Chattopadhyay.

আত্মনির্ভর ভারত ও HAL


#HAL ( Hindustan Aeronautics Limited) নির্মিত #LCH (Light Combat Helicopter) দুটো ভারত চীন সীমান্ত লাদাখে যুদ্ধসামগ্রী সহ অধিক উচ্চতায় কমব্যাট পেট্রোলিং করছে গত এক সপ্তাহ ধরে ।।

এরমধ্যে মজার বিষয় হলো ভারতীয় বায়ুসেনা ও হ্যালের মধ্যে কোনো অফিশিয়াল ডিলই হয় নি ।। বায়ুসেনার অনুরোধে জরুরি ভিত্তিতে দুটো LCH কে HAL লাদাখে পাঠায় কিছু দিন আগে, অন্য দিকে HAL এর কাছে ১০০+ LCH তৈরী হয়ে বসে ছিল বা এখনও আছে।।

লাদাখ সীমান্তে অ্যাপাচের মতো  হেলিকপ্টার আগে থেকেই মোতায়েন ছিল তার পরিপূরক হিসেবে অধিক উচ্চতায় ভারতের তৈরি LCH এর জুড়ি মেলা ভার ।। দীর্ঘ কদিনের সবরকম পরীক্ষা নিরীক্ষার পর আজ LCH সর্বসম্মতি পায় ।। ভারতীয় বায়ুসেনা ও স্থলসেনা মিলিয়ে মোট ১৬০+ টি LCH দরকার, তবে আপাতত ১৫ টি যার মধ্যে ১০ টি বায়ুসেনা ও ৫ টি স্থলসেনাকে খুব জলদি HAL-LCH সরবরাহ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে হিন্দুস্থান অ্যারোনটিকস্ লিমিটেড।। 

প্রসঙ্গত বলে রাখি ১৯৯৯ এর কার্গিল যুদ্ধের সময় আমাদের অধিক উচ্চতায় লড়ার জন্য এই ধরনের হেলিকপ্টারের অভাব ছিল তখন পাকিস্তানি সেনার বাঙ্কার ধ্বংস করতে রাশিয়ার তৈরি পন্য পরিবাহী হেলিকপ্টার MI17 কে রাতারাতি অ্যাটাক হেলিকপ্টারে রূপান্তরিত করা হয়েছিল কাজ চালানোর জন্য ।‌। এটা অপারেশন সফেদ সাগরে সাময়িক সফলতা পেলেও পাকিস্তানী জঙ্গিসেনা একটি MI17 হেলিকপ্টারকে শট ডাউন করতে পেরেছিল ।।

সেই সময় থেকে শিক্ষা নিয়ে এই স্বদেশী LCH & Rudra নির্মানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল 2004 এ, প্রথম প্রোটোটাইপের ফ্লাইং টেস্ট হয় ২০১০ এ এরপর আরো ৪ টি প্রোটোটাইপ বানানো হয় সবরকম পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ,আজ এতো বছরের প্রচেষ্টা সার্থক হতে চলেছে HAL এর হাত ধরে এটা খুব গর্বের বিষয় ।। (এই হেলিকপ্টারটির একটি রেকর্ড আছে পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চ যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেন গ্লেসিয়ারে ১৫৮০০ ফিট উচ্চতার হেলিপ্যাডে এটি একাধিকবার ল্যান্ড করেছে )

দেরিতে হলেও এটা যে #আত্মনির্ভরতার ক্ষেত্রে আরো একটা ধাপগুলো এগিয়ে দিল সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।।

জয় হিন্দ👌🇮🇳💪🇮🇳👍

ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত পরে পরিমার্জিত।
©️সৌভিক সিংহ 
Via: দীপাঞ্জন গীরি।


Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Jai Hind!! Saroop Chattopadhyay.

Freedom at Midnight always remind us about the sorrows of a wounded civilization, still we hope and dream to be a happy nation.

 
“WHEN by my solitary hearth I sit,
And hateful thoughts enwrap my soul in gloom;
When no fair dreams before my "mind's eye" flit,
And the bare heath of life presents no bloom;
Sweet Hope, ethereal balm upon me shed,
And wave thy silver pinions o'er my head!

Whene'er I wander, at the fall of night,
Where woven boughs shut out the moon's bright ray,
Should sad Despondency my musings fright,
And frown, to drive fair Cheerfulness away,
Peep with the moonbeams through the leafy roof,
And keep that fiend Despondence far aloof!

Should Disappointment, parent of Despair,
Strive for her son to seize my careless heart;
When, like a cloud, he sits upon the air,
Preparing on his spell-bound prey to dart:
Chase him away, sweet Hope, with visage bright,
And fright him as the morning frightens night!

Whene'er the fate of those I hold most dear
Tells to my fearful breast a tale of sorrow,
O bright-eyed Hope, my morbidfancy cheer;
Let me awhile thy sweetest comforts borrow:
Thy heaven-born radiance around me shed,
And wave thy silver pinions o'er my head!

Should e'er unhappy love my bosom pain,
From cruel parents, or relentless fair;
O let me think it is not quite in vain
To sigh out sonnets to the midnight air!
Sweet Hope, ethereal balm upon me shed,
And wave thy silver pinions o'er my head!

In the long vista of the years to roll,
Let me not see our country's honour fade:
O let me see our land retain her soul,
Her pride, her freedom; and not freedom's shade.
From thy bright eyes unusual brightness shed---
Beneath thy pinions canopy my head!

Let me not see the patriot's high bequest,
Great Liberty! how great in plain attire!
With the base purple of a court oppress'd,
Bowing her head, and ready to expire:
But let me see thee stoop from heaven on wings
That fill the skies with silver glitterings!

And as, in sparkling majesty, a star
Gilds the bright summit of some gloomy cloud;
Brightening the half veil'd face of heaven afar:
So, when dark thoughts my boding spirit shroud,
Sweet Hope, celestial influence round me shed,
Waving thy silver pinions o'er my head! “

#JohnKeats 
Post from Mr N G Banerjee via Facebook.

Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. 
 Thanks & Vande Mataram!! Saroop Chattopadhyay.

Thursday, August 13, 2020

UNRAVELING THE MIND OF DIDI(Mamata Banerjee). Written by Debjyoti Mukherjee in Facebook

Its almost Official, our respected DIDI MONI has lost it. Yesterday's press briefing was the final nail in the coffin.

If people relinquish their common sense and venture out, there will be mayhem on the roads of Kolkata.

Didi has to pay attention to details, she was a decent micro manager for all I knew, during my days in her party.

This is a clear sign of AGE catching up with her,

Yet, I shall offer some logical steps for rescue.

1. 100% ATTENDANCE in offices will entail public transport to normalize, given the social distance norms, the economic viability of the pricing for bus and autos will be a challenge, thats an under statement, by the way.

2 , Trust Data, if we see the rising positive cases in India and Bengal, regardless of the latent reason as to why? the end result might be a blessing in disguise.

3. We are now hitting the optimal threshold for building herd immunity. Thats the saving grace and a solution to the pricing issue with public transport.

4. Following this logic, more people can travel in buses and autos, provided they have face mask on, the virus does not spread through touch, the probability is very low. It it does, we have to take our chances. Bad luck if some drown. Low immunity.

5. I hope and pray that Government of Bengal is issues orders in lieu of "verbal tonic" of the CM, if the law and order resources, mainly police and the joke called civic volunteers are not aware of the latest development, chaos will ensue, thats a given,

Just a few pointers not a exhaustive list, hope the secretaries will read up and formulate a detailed plan, disseminate that plan to the foot soldiers to minimize communication distortion. Rest I leave to the GREAT WISDOM OF DIDI and her daily dose of EXECUTIVE CRAP .

Disclaimer: Written in public interest and to avoid embarrassment of Bengal on National Stage.


--------

Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post.

Thanks & Jai Hind!! Saroop Chattopadhyay.

Sunday, August 9, 2020

হ্যাঁ বামপন্থী আর মোল্লাপন্থী চিন্তাধারার আদর্শে চললে রামকে ছেড়ে রাবণ কে ভালো লাগাটা স্বাভাবিক!! কিন্তু সত্যিটা জানেন কি??


কিন্তু আসল ব্যাপারটা একটু জানুন।

রাবণের নারী তথা সীতার প্রতি শ্রদ্ধা মুগ্ধ করে তাদের। যে নিজের পুত্রবধূসমাকে ধর্ষণ করে সে নাকি সম্মান করে?? আসলে এটা নলকূবেরর অভিশাপ!

এক দিন হিমালয়ের অরণ্যে ঘুরতে ঘুরতে রাবণ এক সুন্দরী মেয়েকে দেখে। মাথায় জটা, তপস্যায় মগ্ন। মহিলা বললেন, তিনি রাজর্ষি কুশধ্বজের মেয়ে। বেদের মধ্য দিয়ে বাঙ্ময়ী মূর্তিতে তাঁর জন্ম, তাই তাঁর নাম বেদবতী। বিষ্ণুকে স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য তপস্যা করছেন। কামার্ত রাবণ তখন অস্থির, ‘কে বিষ্ণু? ধুর!’ বলেই বেদবতীর চুল টানে। বেদবতী সঙ্গে সঙ্গে চুল কেটে ফেলে নিজের মৃত্যুর জন্য চিতা সাজালেন, ‘পাপিষ্ঠ, তোর বিনাশের জন্য ফের কোনও ধার্মিকের অযোনিজা কন্যা হিসাবে জন্মাব।’
******

চাঁদনি রাতে রাবণ কৈলাস পর্বতে তার রাক্ষস সৈন্যদের নিয়ে বসে আছে, পথ বেয়ে চলেছে অপ্সরা রম্ভা। রাবণ বলল, ‘আহা সুন্দরি, ওই স্তনযুগল আজ কে স্পর্শ করবে? কে পান করবে তোমার অধরামৃত?’ অপ্সরা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে জানাল, সে রাবণের পুত্রবধূসম। রাবণের ভাই কুবের, তারই ছেলে নলকুবের। তিনিই রম্ভার স্বামী। রাবণ অট্টহাসি হেসে উঠল, ‘অপ্সরার আবার স্বামী!’ অতঃপর ধর্ষিতা রম্ভা ছাড়া পেয়ে নলকুবেরের কাছে গিয়ে আছড়ে পড়ে। নলকুবের তখনই অভিশাপ দিলেন, ‘এর পর রাবণ কামার্ত হয়ে যখনই কোনও অনিচ্ছুক মেয়ের উপর বলপ্রয়োগ করতে যাবে, ওর দশ মাথা একশো টুকরো হয়ে যাবে।’

এই ভয়েই রাবণ সীতার বিরুদ্ধে কোনো বলপ্রয়োগ করতে পারেনি, যদিও নানান ছলনা করে তাকে বশ করতে চেয়েছিল।

এগুলো না জেনে বামপন্থী আর মোল্লাপন্থী চিন্তাধারায় বিশ্বাসী হয়ে রাবণকে হিরো মানার আগে আর একবার ভাবুন।

#সংগৃহীত ও পরিমার্জিত।

Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. 
Thanks & Jai Hind 🇮🇳!! Saroop Chattopadhyay.

Saturday, August 8, 2020

ভগবান রামচন্দ্র (রঘুবীর) ও ঠাকুর শ্রী রামকষ্ণ পরমহংস দেব, আর বর্তমানের সেক্যুলার (আসলে সিক কুলার) গণ।

শ্রীরামকৃষ্ণের কুলদেবতা ছিলেন ৺রঘুবীর। তিনি নিজে  দেবতার কবচ পরতেন, তাঁর পার্থিব শরীর পঞ্চভূতে লয় হওয়ার পরবর্তী সময়ে শ্রীমা সেই পবিত্র কবচ পরতেন। তার অনেক ইতিহাস আছে। এই কবচ সম্পর্কে শ্রীমাকে অলৌকিক উপায়ে তিনি একবার সতর্ক করেছিলেন, তা চিরকাল স্মরণে রেখেছিলেন শ্রীমা। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে শ্রীরামকৃষ্ণ শুধুমাত্র আত্মভাবেই ৺ভবতারিণী মায়ের দর্শন পেয়েছিলেন। 
আরাধ্য দেবীর দর্শন লাভের পর তাঁর সাধ হয়েছিল নিজের কুলদেব ৺রঘুবীর রামচন্দ্রকেও দেখবার। সফল হয়েছিলেন তিনি। রামচন্দ্র ও লক্ষ্মণকে তিনি যেমন দেখেছেন, তেমনই দেখেছেন সীতাদেবীকে প্রণামরত হনুমানকে।

শ্রীরামকৃষ্ণের অন্যতম গুরু ছিলেন রামায়েৎ বৈষ্ণব জটাধারী। তাঁর কাছেই শ্রীরামকৃষ্ণ রামচন্দ্রের শিশুমূর্তির পূজা শিখেছিলেন। জটাধারী, শ্রীরামকৃষ্ণ ও রামলালা এই তিনজনের লীলাবৈচিত্রে দক্ষিণেশ্বর প্রাঙ্গন মেতে উঠেছিল। সেই পবিত্র রামলালার বিগ্রহ জটাধারীর কাছ থেকে গুরু পরম্পরায় পেয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। জটাধারী শ্রীরামকৃষ্ণকে ভালোবাসতেন। তিনিও বুঝেছিলেন রামলালার সার্থক উত্তরসূরী হিসেবে শ্রীরামকৃষ্ণই যথার্থ। জটাধারীর মতো প্রাজ্ঞ বৈষ্ণব গুরু নিশ্চয়ই বুঝেছিলেন তাঁর এই দিব্য শিষ্যের কুলদেবতা ৺রঘুবীরই। এর চেয়ে বড় আধার আর কোথায় পাবেন? রামলালা থেকে গিয়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণের কাছেই।
শ্রীরামকৃষ্ণ ছেলেবেলা থেকেই রামচন্দ্রের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। নিজেও হয়ে উঠেছিলেন রামায়ণের অনন্য ভাষ্যকার, সেই সম্পর্কে আমার ‘রামায়ণ ও রামকথা : কথামৃত প্রসঙ্গে’ বইতে বেশ কিছু লিখেছি, এখানে আর তা পুনরাবৃত্ত করার প্রয়োজন নেই। শুধু এটুকুই বলব, শ্রীরামকৃষ্ণের মতো করে রামচন্দ্র ও রামায়ণকে খুব কম বাঙালিই বুঝেছেন। এই বঙ্গদেশ কৃত্তিবাসী রামায়ণের দেশ। এই বঙ্গদেশ এখনও সীতার দুঃখে চোখের জল ফেলে। এই সেই বঙ্গদেশ যেখানে এখনও রামায়ণে তুলসী অর্পণ হয়। এখানে রামচন্দ্রের প্রাচীনত্বের প্রশ্ন তোলাই বৃথা। রাজনৈতিক মতাদর্শগত বিভেদ মুছুক। আধ্যাত্মিকতার আলোয় আলোকিত হোক শ্রীরামকৃষ্ণের রাম ও রামায়ণচর্চার ভূমি, আমাদের বঙ্গদেশ। শুভ হোক। শুভ হোক। শুভ হোক।

কিন্তু ওনারা বললেন রামচন্দ্র বাঙ্গলার সংস্কৃতি নয় ( ভাবখানা এমন যেন লেনিন, চে-গু, মাও সব যাদবপুরে জন্মেছে)..... এইতো সেদিন, গরু-বিকাশ আপত্তি তুললেন, যে রামকৃষ্ণ মিশন এর মাটি ভূমিপূজোন এ কেন যাবে??
যাইহোক, ওনারা অনেক বোঝেন.....

#collected #SriramRaghavan #RamMandirAyodhya #sriram #RamMandir #paramhanshamathomission 


Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. Thanks & Jai Hind!! Saroop Chattopadhyay.

Sunday, August 2, 2020

স্বামীজি ও নেতাজীকে নিয়ে মিথ্যাচার আর কতদিন চলবে?

"উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান নিবোধত !"
কঠোপনিষদের এই লাইনগুলো স্বামীজির বড় প্রিয় ছিল ! 

নিজের বক্তৃতায় তিনি পরাধীনতার গ্লানিতে ন্যুব্জপৃষ্ঠ দেশবাসীকে মুক্তির বার্তা দেন। অনুপ্রাণিত হন দেশের নানা প্রান্তের বিপ্লবীসত্তা। তাঁর শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতা একসময় আইরিশ বিপ্লবের সাথে যুক্ত ছিলেন ! যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় নিবেদিতার প্রিয় ছিলেন । সুভাষচন্দ্রের জীবনে স্বামীজির প্রভাব বহুচর্চিত।

বিশ্ববরেণ্য স্বামী বিবেকানন্দ আজও কতটা প্রাসঙ্গিক "পরিব্রাজক", "প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য" প্রমুখ বইগুলি তার প্রমাণ ।
কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, অশিক্ষিত মূর্খরা সেই স্বামীজির পবিত্র সত্তাকে কলুষিত করতে ছাড়েনা।

সামান্য নেগেটিভ পাবলিসিটি পাওয়া নয়, এর পিছনে অন্য এক গভীর অভিসন্ধি আছে । ছদ্ম হিন্দুত্ববাদের জিগির তুলে, নিজেকে আর. এস্. এস্. -এর লোক বলেও সে প্রমাণ করতে চায়, এমনটা শোনা যায় । রামকৃষ্ণ মিশনের কোন বইতে স্বামীজির সন্ন্যাসের বৈধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে আমিও জানতে চাই । এমন চটকদার মিথ্যে কেউ শুনেছেন ?

হ্যাঁ এইসব মূর্খ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকরাই ফৈজাবাদের সন্ন্যাসী ভগবানজি, যাঁকে অনেকেই সুভাষচন্দ্র বসু বলেই মনে করেন, তাঁকে রামমন্দির আন্দোলনের কর্ণধার বলে ঝুরি ঝুরি মিথ্যে প্রচার করে । এতটাই অশিক্ষিত এরা যে কিছুদিন আগে সুভাষচন্দ্রের সাথে প্রবীণ সোস্যালিস্ট নেতা স্বামী সহজানন্দের ছবিকে পুরীর শঙ্করাচার্য্য বলে প্রচার করছিল । আজ বর্ণবাদী আক্রমণ এল স্বামী বিবেকানন্দের উপর।

জানি না এদের হয়ত আর. এস্. এস্. -এ অনেক পরিচয় । তবে আমার সীমিত পঠন পাঠনে যতটুকু বুঝি, এমন বিকৃত মনস্কতা কোন মাস মুভমেন্ট করা রাজনৈতিক দলই সমর্থন করে না।

সমালোচকদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, আশা রাখব। স্বামীজির বই অশিক্ষিতদের উন্মুক্ত করুক !
PC: Facebook 

Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post.

Thanks & Jai Hind!! Saroop Chattopadhyay.

Some recent posts

ভগবান রামচন্দ্র (রঘুবীর) ও ঠাকুর শ্রী রামকষ্ণ পরমহংস দেব, আর বর্তমানের সেক্যুলার (আসলে সিক কুলার) গণ।

শ্রীরামকৃষ্ণের কুলদেবতা ছিলেন ৺রঘুবীর। তিনি নিজে  দেবতার কবচ পরতেন, তাঁর পার্থিব শরীর পঞ্চভূতে লয় হওয়ার পরবর্তী সময়ে শ্রীমা সেই পবিত্র কব...