Friday, September 25, 2020

ক্লাবকে টাকা দান, পুজো কমিটিকে অর্থ, ইমাম ও পুরোহিত ভাতা, মাদ্রাসায় টাকা, সংখ্যালঘুদের প্রকল্প.. এগুলো তো উন্নয়ন নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সরকার কি চায়না রাজ্যবাসী আত্মনির্ভর হোক??

সদ্যই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঘোষনা করা হয়েছে এ’বছর দূর্গা পুজো কমিটিগুলোকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৫০ হাজার টাকা স্বল্প দান দেবে। আর তারপরেই একদল হঠাৎ করেই মাননীয়ার দান ধ্যানের তুলনা হয়না, ধর্ম যার যার উৎসব সবার এর বালখিল্যপনা শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের উদ্দ্যেশ্যে দু’টো পরিসংখ্যান আর কয়েকটা প্রশ্ন রাখতে চাই।

না, উভয়ক্ষেত্রে সমবন্টন কেন হবেনা জাতীয় সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন করে আপনাদের বিব্রত করবোনা। সম্প্রীতি বড় বালাই। বুকে আগলে রাখুন। প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। দু’টো ঘোষনার সময়কাল নিয়ে (সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের তারিখগুলো দেখে নিন চট করে এই ফাঁকে একবার)।

কোভিড এবং আম্ফান পরিস্থিতিতে ত্রাণ তহবিল গঠনে রাজ্য সরকারের অর্থাভাব এবং কেন্দ্রের বঞ্চনার কারনে রাজ্যের অসহায়তার কথা নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলন করে মাননীয়া জানিয়েছেন। ওনার দলের কর্মীরাও সামাজিক মাধ্যম এবং পথে ঘাটে সেটার বহুল প্রচার করেছেন।

প্রশ্ন হল, তাহলে এরকম পরিস্থিতিতে বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য ৪ হাজার কোটি টাকার তহবিলের অর্থ বরাদ্দ কিভাবে হল? কেন্দ্র টাকা দিয়েছিল?
যদি না দিয়ে থাকে তাহলে অর্থাভাবের কারনে কোভিড এবং আম্ফান পরিস্থিতিতে ত্রাণ তহবিল গঠনে রাজ্য সরকারের অসহায়তার কথা কতটা সত্যি আর কতটা সদিচ্ছার অভাব?

মহামারীর সময়ে জনগণের প্রদেয় করের অর্থ সামগ্রিক রাজ্যবাসীর উন্নয়ন এবং প্রয়োজনের খাতিরে ব্যবহার না করে নির্দিষ্ট একটি জনগোষ্ঠীর স্বার্থে ব্যবহার করা কতটা যুক্তিযুক্ত?

মাঝেরহাট ব্রীজ/টালা ব্রীজ এর কাজ শম্বুক গতিতে চলছে। জেলার অনেকগুলি রাস্তার হালই বেহাল। টানা লকডাউনের ফলে অর্থনীতির অবস্থাও তথৈবচ। পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।।


পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে টাকা ছিলনা, তাদের পুনর্বাসন ও হল না।
করোনার মোকাবিলায় উপযুক্ত স্বাস্থ পরিসেবা দেওয়ার জন্য অর্থাভাব।
সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের কিট দেওয়ার অর্থ নেই।।

রাজকোষে কি অর্থ উদ্বৃত্ত? যদি না হয় তাহলে পুজো কমিটিগুলোকে স্বল্প দান দেওয়ার নামে জনগণের প্রদেয় করের অর্থ এভাবে ব্যয় করার যুক্তি কি? যে উন্নয়নমূলক কাজগুলোর প্রায়রিটি বেশী সেগুলোতে অর্থ বরাদ্দ করাটা বেশি প্রয়োজনীয় ছিল না কি? আবার সেই একই প্রশ্ন, এরকম কঠিন সময়ে, যখন বেকারত্বের চাপে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির চাপে সাধারন মানুষ নাজেহাল তখন জনগণের প্রদেয় করের অর্থ সামগ্রিক রাজ্যবাসীর উন্নয়ন এবং প্রয়োজনের খাতিরে ব্যবহার না করে নির্দিষ্ট একটি জনগোষ্ঠীর স্বার্থে ব্যবহার করা কতটা যুক্তিযুক্ত?

রাজনৈতিক কচকচানি সরিয়ে রেখে একজন রাজ্যবাসী হিসেবে চিন্তা করুন। সস্তার জনমোহিনী ঘোষনা শুনে উদ্বেল হয়ে ওঠার আগে একবার ভেবে দেখুন, সামগ্রিক জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন পূরণ করাটাই কি সরকারের প্রায়রিটি হওয়া উচিৎ ছিল না?
মাননীয়ার সরকার কি চায়না রাজ্যবাসী আত্মনির্ভর হোক নাকি বিভিন্ন খয়রাতির নামে রাজ্যবাসীকে আজীবন মুখাপেক্ষি করে রাখাই রাজ্য সরকারের উদ্দ্যেশ্য? ভাবুন।
            ---------------------

লেখা: শ্রীযুক্ত পিনাকী মুখার্জী।
এডিট ও সংযোজন: স্বরূপ চট্টোপাধ্যায়।

Please see other posts in this blog page by clicking "Home" or from "My Favorite Posts" / "Popular Posts" / "Archives" sections, and if any remarks please feel free to post. 
 Thanks & Jai Hind 🇮🇳!! Saroop Chattopadhyay.

No comments:

Post a Comment

Some recent posts

ভগবান রামচন্দ্র (রঘুবীর) ও ঠাকুর শ্রী রামকষ্ণ পরমহংস দেব, আর বর্তমানের সেক্যুলার (আসলে সিক কুলার) গণ।

শ্রীরামকৃষ্ণের কুলদেবতা ছিলেন ৺রঘুবীর। তিনি নিজে  দেবতার কবচ পরতেন, তাঁর পার্থিব শরীর পঞ্চভূতে লয় হওয়ার পরবর্তী সময়ে শ্রীমা সেই পবিত্র কব...